• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ভ্যালেন্টাইন্স ডে: নওগাঁর আদালতে শুধুই ভালোবাসার মামলার শুনানি

প্রকাশ:  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে শুধুমাত্র প্রেম-ভালবাসা সংক্রান্ত মামলাগুলোরই শুনানির আয়োজন করা হয়েছে।

আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এই আদালতে ৩৬টি মামলার শুনানি হবে, যার সবগুলোই প্রেম-ভালবাসা সম্পর্কিত।

এদিন শুনানির জন্য আদালতে আসা যুগলদের “লাভ ক্যান্ডি” দিয়ে শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মকবুল হোসেন।

আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান তালুকদার বেলা ১১টায় এজলাসে বসে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি শুনানিতে উপস্থিত যুগলদের প্রেমে না জড়িয়ে নিজেদের ধর্মীয় অনুশাসন ও বাবা-মায়ের আদেশ মেনে চলা, পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া, আত্মনির্ভরশীল হওয়া এবং শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মকবুল হোসেন বলেন, “আজ ভিন্নভাবে আদালত বসেছে। ট্রাইব্যুনালের অসম প্রেমে জড়ানো ও তা থেকে অভিভাবকদের অপহরণ এবং বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলাগুলো আজ শুনানির জন্য রাখা হয়। বিচারক সংশ্লিষ্টদের লেখাপড়ার পাশাপাশি ধর্মীয় মূল্যবোধে ও গুরুজনদের আদেশ-নিষেধ মেনে চলার উপদেশ দেন।”

নওগাঁ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, “মামলাগুলো ভিন্ন ভিন্ন দিনে শুনানি করলে বিচারক মহোদয় সবাইকে একই উপদেশ দিতে পারতেন না। মামলাগুলো একইদিনে শুনানির উদ্যোগ নিয়ে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

আদালতে যেসব মামলার শুনানি হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মামলা হলো-

কয়েক বছর আগে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার এক কিশোরী (১৭) সনাতন ধর্মের এক যুবকের (২১) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেই সময় ওই কিশোরীর বয়স ছিল ১৪ বছর। সে তখন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মেয়েটির পরিবার এই সম্পর্কের কথা জানতে পারে। এ সম্পর্কে পরিবারের মত না থাকায় মেয়ে ও ছেলে দুজনই একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নেয়। পরে ২০২১ সালের ২০ জুন তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবার করা অপহরণ মামলায় ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাপাহার উপজেলার ১৬ বছর বয়সী কিশোরী আঁখির (ছদ্মনাম) গত বছর ৯ জানুয়ারি প্রেমিক পরশের (ছদ্মনাম) কর্মস্থল ময়মনসিংহে পালিয়ে যান। এরপর এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ের ঘোষণা দিয়ে ময়মনসিংহেই একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। ছেলেটি রাজমিস্ত্রির কাজ করত। এরপর ২২ জানুয়ারি বাড়ি ফিরে আসেন আঁখি। ততদিনে তার বাবা পরশের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় পরশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আদালত ওই মামলায় পরশকে কারাগারে পাঠিয়ে আঁখিকে তার পরিবারের জিম্মায় দেন।

পোরশা উপজেলার ১৬ বছর বয়সী রুবাইয়ার (ছদ্মনাম) ২০২২ সালের ৯ জুলাই প্রেমিক জাহিদের (ছদ্মনাম) সঙ্গে ঘুরতে বের হন। আর এটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় রুবাইয়ার। জাহিদ তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় রুবাইয়ার বাবা বাদী হয়ে জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে এ মামলায় পুলিশ প্রেমিক জাহিদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

সাপাহার উপজেলার ১৭ বছর বয়সী শ্রাবনী (ছদ্মনাম) রবিন্দ্রনাথ সরেনের (ছদ্মনাম) সঙ্গে ২০২২ সালের ২২ জুলাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তাদের পালানোর প্রধান কারণ ছিল শ্রাবনী হিন্দু আর সরেন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী। এছাড়াও শ্রাবনীর অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেছিল তার পরিবার। ছয়দিন পর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এরপর শ্রাবণীর বাবার দায়ের করা অপহরণ মামলায় সরেনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ভালোবাসা,প্রেম,নওগাঁ,আইন ও আদালত

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close