• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাসায়নিক ছড়িয়ে কর্ণফুলীর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে: চিনিকলে অগ্নিকাণ্ড

প্রকাশ:  ০৬ মার্চ ২০২৪, ২১:০৭
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের চিনিকলের রাসায়নিক ও ছাইয়ের কারণে কর্ণফুলী নদীর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। পাশের কর্ণফুলী নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মরা ও অর্ধমৃত মাছ ভেসে বেড়াতে দেখা যায়, সাথে বিভিন্ন স্থানে কাঁকড়া, সাপ, ব্যাঙসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর মৃতদেহ দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিনিকলের রাসায়নিক পদার্থ পানিতে মিশে মাছ মরে যাচ্ছে।

বুধবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণে কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন এলাকায় শত শত মানুষ ভাসমান মাছ ধরতে ভিড় জমায়।

সরেজমিনের দেখা গেছে, কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগরে বাংলাবাজার খালের চারপাশের নদী ও খালের পানির রং লাল হয়ে গেছে, ভেসে উঠছে হাজার হাজার মরা মাছ। বিভিন্ন বয়সী মানুষকে এসব মাছ ধরতে দেখা গেছে।

মাছ ধরতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত থেকে গলদা চিংড়ি ও অন্যান্য ছোট মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আমি ২০-৩০টি মাছ ধরতে পেরেছি। আগে কখনো এভাবে মাছ ভাসতে দেখিনি। পানিও লাল হয়ে গেছে। আমার মনে হয় চিনিকলের কেমিকেলের কারণে এমন হতে পারে।’’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদীর গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘মাছের মৃত্যু ইঙ্গিত দেয় যে নদীর পানি বিষাক্ত। এই বিষাক্ত পানি ছড়িয়ে পড়লে আরও দূষণ হবে। চিনিকলের ড্রেন অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া জরুরি। মাছের পাশাপাশি নদীতে প্ল্যাঙ্কটন এবং জলজ উদ্ভিদও মারা যাচ্ছে, যা অস্বাভাবিক।’’

হালদা নদীর উপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা নির্ভর করে জোয়ারের ওপর। কর্ণফুলীর দূষিত পানি যদি জোয়ারের পানির সাথে মিশে হালদায় পৌঁছায়, তাহলে নিঃসন্দেহে এর প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে হালদা নদীর কার্পের মতো প্রজননক্ষম মাছের ক্ষতি করবে।’’

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত রয়েছি এবং আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। ভাটার সময় এটি কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এটি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, ‘‘যদিও চিনি একটি পুষ্টিকর খাদ্য, তবে পানিতে অতিরিক্ত মেশানোর ফলে ইউট্রোফিকেশন ঘটে। এতে প্লাঙ্কটনের আধিক্য বাড়ে এবং পানির গুণমান খারাপ হয়, যা জলজ প্রাণীদের ক্ষতি করে। এরকম কয়েক মাস ধরে চলতে থাকলে নদীর জীববৈচিত্র্য বড়রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’

চট্টগ্রাম,চিনিকল,অগ্নিকাণ্ড,কর্ণফুলী নদী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close