• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

৫ সাংবাদিককে তালাবদ্ধ রেখে জেলে দেওয়ার চেষ্টা এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে

প্রকাশ:  ১৪ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

লালমনিরহাট সদর উপজেলার এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় শহরের টিএনটি রোডে সদর এসিল্যান্ড অফিস প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে ঢাকা-বুড়িমারী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিচার দাবি করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

জানা গেছে, ওই অফিসে আবেদনকৃত জমির খারিজ এর শুনানি উপজেলা এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে যান মাইটিভি লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি মাহফুজ সাজু। এ সময় ভুক্তভোগী এক ব্যক্তির ভিডিও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় এসিল্যান্ডের নির্দেশে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অফিসের কর্মচারীরা। খবর পেয়ে আরও চার সাংবাদিক ঘটনাস্থলে এলে তাদের অফিসে আটকে রেখে অফিস গেটে তালা লাগিয়ে দেয়।

এ সময় এসিল্যান্ড অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে তিনি পুলিশ ডেকে এনে সাংবাদিকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে দেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি. এম এ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন।

পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতেই ওই সহকারী কমিশনার সাংবাদিকদের ‘দালাল’ বলে অপমান করতে থাকেন। এসময় সাংবাদিকরা অফিসের সামনে অবস্থান নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ সময় পেছনে থাকা চ্যানেল আই এর ক্যামেরা পারসনের মোটরসাইকেল আটকে দিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার।

ক্যামেরা পারসন আব্দুল মান্নান জানান, মোটরসাইকেলের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল। কিন্তু কাগজগুলো সঙ্গে ছিল না। এসিল্যান্ডের কাছে ১০ মিনিট সময় চাওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুদ্ধ থাকায় কোনো সময় দেননি।

এ ঘটনা শোনার পর সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক শহরের মিশনমোড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় অভিযুক্ত সহকারী কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা ধর্মঘট তুলে নেন।

সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমি সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে সহকারী কমিশনার উপস্থিত ছিলেন না। পরে মাইটিভি ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সাংবাদিক মাহফুজ সাজু এ শুনানির ভিডিও ধারণ করেন এবং একজন ভুক্তভোগীর ভিডিও বক্তব্য নেন। এতে অফিসের স্টাফরা ক্ষুদ্ধ হয়ে সহকারী কমিশনারকে ডেকে আনেন। পরে সহকারী কমিশনারের নির্দেশে সাংবাদিক মাহফজু সাজুকে অফিসে আটক করে এবং এসিল্যান্ড সাংবাদিক সম্পর্কে অপ্রীতিকর মন্তব্য করতে থাকে। খবর পেয়ে প্রেস ক্লাব থেকে আরও চার সাংবাদিক সেখানে ছুটে যান। পরে তাদেরও আটক রেখে অফিস গেটে তালা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি.এম.এ মমিন এসে তাদেরকে তালা খুলে উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে সাংবাদিকদের অফিসে আটকিয়ে গালিগালাজ ও জেলে পাঠানোর চেষ্টার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন জানান, সহকারী কমিশনারের অনুপস্থিতিতে অফিস সহকারীরা কোনোভাবেই জমির খারিজ শুনানি করতে পারেন না। বিষয়টি জেলা প্রশাসক খতিয়ে দেখছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, পুরো ঘটনাটি অবগত হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লালমনিরহাট,বুড়িমারী,সড়ক অবরোধ,সাংবাদিক

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close