• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা

প্রকাশ:  ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩১
পাবনা প্রতিনিধি

নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় মানিক হোসেন (৩৩) নামের এক সাংবাদিককে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে আহত সাংবাদিকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৫।

উপজেলার চক লক্ষীকোল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রাজিব হোসেন (২৭), পুঁইবিল গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে বায়োজিদ হোসেন (২৫), মৃত হামিদ প্রামাণিকের ছেলে মাহাতাব আলী (২৭), কৈডাঙ্গা নতুনপাড়া গ্রামের আবু তালেবের ছেলে আবুল বাশার (৪০), মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে বাবু হোসেন (৩০)।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, 'মামলা দায়ের হয়েছে, কিন্তু এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে, আশা করি খুব শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।'

অভিযোগে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে বাজারজাত করে আসছেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিক হোসেন সহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করেন। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।

পরে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাব সহ দশ বারোজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুঁইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা মুমূর্ষু হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরির ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন হুমকি দিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে তারা। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, এক্সরেতে দেখা যায় মানিকের পায়ের হাড় ডিসপ্লেস হয়ে গেছে। এর চিকিৎসা ভাঙ্গুড়ায় সম্ভব নয়। তাই পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এদিকে, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাবনায় কর্মরত সাংবাদিকরা। পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, 'সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা, হুমকি, হামলা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিক মেরে কিছু হয়না বিষয়টি এমন হয়ে গেছে। শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। মানিকের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। না হলে কঠোর কর্মসূচী দেওয়া হবে।'

সাংবাদিক,মামলা,থানা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close