বেপরোয়া ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক
ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং বিভিন্ন উপজেলা, পৌর ও কলেজ কমিটিতে পদায়নের কথা বলে প্রায় কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরের বিরুদ্ধে। এর আগেও তাকে অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি ঈশ্বরগঞ্জ কমিটি দিতে ৪০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। ওই ঘটনার একটি কল রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। যেখানে শোনা যায়, ‘চল্লিশের মত এদিক ওদিক করা আছে। তোকে তো আগেই বলেছিলাম ২০ লাখ টাকা রেডি করতে। তুই তো পারলি না। খালি ফোন দেওয়াস, টাকা না দিলে আসিস না।’
সম্পর্কিত খবর
গত ১৯ ডিসেম্বর শামীম আহমেদকে সভাপতি ও আফসানুল ইসলাম খান রাফিকে সাধারণ সম্পাদক করে ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই অর্ধ কোটি টাকার উপরে বাণিজ্য হয়েছে এমন অভিযোগ স্থানীয় নেতাদের।
এদিকে বিবাহিত, ছাত্রদল কর্মী, বয়স গোপন করে কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরের বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে দেওয়া ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে দলের পরীক্ষীত নেতাদের বাদ দিয়ে জাটিয়া ইউনিয়নের এক ছাত্রদল কর্মীকে সহ-সভাপতি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও বিবাহিত দুজনকেও সহ-সভাপতি করা হয়েছিল। কমিটিতে পদ পান কমিটির শীর্ষ দুই নেতার না চেনা লোকজনও।
নানা অভিযোগে ২০২২ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়। তবে পরবর্তীতে তিনি আবার পদ ফিরে পান। ওই সময় হুমায়ূন কবির বিভিন্ন জনকে বলেছিলেন, টাকা দিয়ে তিনি পদ ফিরে পেয়েছেন।
এছাড়া হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক সেবন ও ব্যবসা এবং টেন্ডারবাজিরও অভিযোগ রয়েছে। এ সব বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরকে অনেকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি আদর্শিক সংগঠন। সংগঠনের পরিপন্থী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে অতীতেও কেউ ছাড় পায়নি। বর্তমানেও পাবে না। আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’