• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ

শ্রমিক না হয়েও প্রভাব খাটিয়ে তারা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি-সম্পাদক

প্রকাশ:  ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:১৭ | আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২০
জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জে উপজেলা সিএনজি, অটোরিকশা, অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফজলুর রহমান খুদু ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান লাল। ছবি: সংগৃহীত

গত ৪ এপ্রিল জামালপুরের বকশীগঞ্জে উপজেলা সিএনজি, অটোরিকশা, অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের ১৪ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে সংগঠনের জেলা কমিটি। কমিটিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ফজলুর রহমান খুদুকে সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান লালকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। তবে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল সমর্থিত এ দুজনের কেউই শ্রমিক নন। এমনকি তাদের কারো সিএনজি, অটোরিকশা, অটোটেম্পু নেই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তাদের এই সংগঠনের নেতা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংগঠনের সাধারণ শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, প্রভাব খাটিয়ে কমিটির অনুৃমোদন এনে চাঁদাবাজিতে মেতেছেন তারা।

সংগঠনের নতুন কমিটি নিয়ে চালকরা জানান, সভাপতি ফজলুর রহমান খুদু ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান লাল কখনো সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক ছিলেন না, এমনকি তার নিজের কোনো সিএনজি চালিত অটোরিকশা নেই। তারা জীবনে কখন অটোরিকশা বা সিএনজি চালাননি। সম্প্রতি ভুল তথ্য প্রদানের মাধ্যমে তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। অশ্রমিক দ্বারা কমিটি গঠিত হওয়ায় মেহনতি সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে। বহুদিন কোনো কার্যকরী কমিটি না থাকার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে শ্রমিকবিহীন কমিটি পাস করিয়ে আনা হয়েছে জেলার কমিটির কাছ থেকে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থীভাবে উপজেলা কমিটির সভাপতি পদে ফজলুর রহমান খুদু ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাইদুর রহমান লালকে নেতৃত্বে রেখে কমিটি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা চালকরা।

ভুক্তভোগী সিএনজি ও অটোরিকশা চালকরা অভিযোগ করে বলেন, জেলা থেকে কমিটি বাগিয়ে এনে খুদু ও লালের নেতৃত্বে সড়কে নেমে পড়েন চাঁদাবাজিতে। জামালপুর রোড, শেরপুর রোড ও রৌমারী রোড এই তিন রোডে প্রতিদিন ২৫০টি সিএনজি চালিত অটোরিকসা চলাচল করে। চলাচলরত প্রত্যেক সিএনজি চালিত অটোরিকসা থেকে চাঁদা আদায় করছে চক্রটি।

চালকরা আরও বলেন, শ্রমিক কল্যাণের নামে আমাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে বিপুল অংকের টাকা আদায় করলেও শ্রমিকদের কল্যাণে একটি টাকাও ব্যয় হয় না। পুরো টাকায় খুদু-লাল সিন্ডেকেট ভাগাভাগি করে নেয়। কোন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে সাহায্য সহযোগি দূরের কথা, সড়কে দুর্ঘটনার মুখে পড়লে বিপদেও এগিয়ে আসেনা। যদিও আসে বিপদে উদ্ধারে মিমাংসার নামে আমাদের কাছে হাতিয়ে নেয় টাকা। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করবে কি, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকতো নিজেরাই শ্রমিক না। শ্রমিকের দুঃখ বুঝবে কেমনে।

বকশীগঞ্জ উপজেলা সিএনজি, অটোরিকশা ও অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, নতুন কমিটি গঠনে সংগঠনের গঠনতন্ত্র মানা হয়নি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিএনজি অটোরিকশা অটো টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটিতে থাকতে হলে অবশ্যই সিএনজি অটোরিকশা চালক অথবা মালিক হতে হবে। কিন্তু এখানে সেটা মানা হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নির্বাচিত করা হয়েছে তারা সিএনজি অটোরিকশা চালক না, এমনকি তার মালিকানাধীন কোনো সিএনজি অটোরিকশা নেই। গঠনতন্ত্র মোতাবেক তাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সুযোগ নেই।

বকশীগঞ্জ উপজেলা সিএনজি, অটোরিকশা ও অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান লাল বলেন, বর্তমানে আমার কোন সিএনজি,অটোরিকশা ও অটো টেম্পু নেই। আগে ছিল, ভাড়া দিতাম পরে তা বিক্রি করে দিয়েছি।

তিনি অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমি ও সংগঠনের সভাপতি কেউ শ্রমিক না। কমিটির বাকি সদস্য শ্রমিক। ওরাই কমিটির কাজ করে। আমরা ওদের দেখভাল করি।

জামালপুর

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close