ডাস্টবিনে ৩১ নবজাতকের লাশ
বরখাস্ত হচ্ছেন শেবাচিমের গাইনি বিভাগের প্রধান
বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) ডাস্টবিন ও ড্রেন থেকে ‘অপরিণত’ ৩১ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. খুরশিদ জাহান এবং ওই বিভাগের ওয়ার্ড ইনচার্জ নার্স জোসনা বেগমকে সাময়িক বরখাস্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্তের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হবে।
সম্পর্কিত খবর
এর আগে, সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের পানির ট্যাংক সংলগ্ন ডাস্টবিন থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত এসব নবজাতকের অধিকাংশ অপরিণত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে শেবাচিম হাসপাতালের ময়লার ডাস্টবিনে এসব মরদেহ দেখতে পান পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানান তারা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল মোদাচ্ছের আলী কবির বলেন, রাতে হাসপাতালের পশ্চিম পাশে কেন্দ্রীয় পানির ট্যাংক সংলগ্ন ডাস্টবিনের ময়লা অপসারণ করছিলেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এ সময় ময়লার ভেতরে বালতি ভরা অপরিণত শিশুর মরদেহগুলো দেখতে পান তারা। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ওখানে ৩১ টি অপরিণত শিশুর মরদেহ রয়েছে। তবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দাবি মৃতদেহের সংখ্যা ২৫টি। এর বেশিও হতে পারে।
মোদাচ্ছের কবির বলেন, অনেক মায়ের অপরিণত বাচ্চা জন্মায়। যা অনেক সময় পরিবারের লোকেরা নিয়ে যায়। আবার অনেকে ফেলে যায়। রেখে যাওয়া বাচ্চাগুলো দিয়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস নেয়া হয়। পরে তা কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মাটি চাপা দেয়া হয়। কিন্তু বাচ্চাগুলোর মরদেহ মাটি চাপা না দিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হলো কেন সে বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এসএম বাকির হোসেন বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ব্যবহারিক কাজে এসব মরদেহ সংরক্ষণ করা হয়। হাসপাতালে অনেক নারীদের অপরিণত বাচ্চা জন্মায়। সেগুলো ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ব্যবহারিক কাজে লাগে। বিভিন্ন সময় এসব অপরিণত শিশুর মরদেহ সংরক্ষণ করা হয়েছে। এসব মরদেহ ডাস্টবিনে না ফেলে মাটি চাপা দেয়ার কথা ছিল। ভুলক্রমে এসব মরদেহ ডাস্টবিনে ফেলা হয়েছে। মরদেহগুলো মাটি চাপা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের মরদেহগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
পিবিডি/এসএম