• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

আইনস্টাইনের জন্মে হকিংয়ের মৃত্যু

প্রকাশ:  ১৪ মার্চ ২০১৮, ১৮:৩১ | আপডেট : ১৪ মার্চ ২০১৮, ২০:১৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের পর সেরা পদার্থবিদ হিসেবেই সমাদৃত হয়ে থাকেন স্টিফেন হকিং।কাকতালীয়ভাবে মাস্টারমাইন্ড আইনস্টাইনের জন্মদিনেই মৃত্যু হলো তার উত্তরসূরি স্টিফেন হকিংয়ের।

১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানিতে জন্ম নেন আপেক্ষিকতা তত্ত্বের জনক অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের।এর ঠিক ১৩৯ বছর পর একই দিনে মারা গেলেন স্টিফেন হকিং।

সম্পর্কিত খবর

    বুধবার সকালে ক্যামব্রিজে নিজ বাসভবনে ৭৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হকিং। বিশ্বখ্যাত এই পদার্থবিদ ছাড়া আইনস্টাইনের গবেষণাকর্ম আর তত্ত্ব বিশ্লেষণের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে আর কাউকে এ পর্যন্ত মর্যাদা দেয়া সম্ভব হয়নি। মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্যের তাত্ত্বিক ব্যাখায় কৃষ্ণবিবর বা কৃষ্ণগহ্বর ও বিকিরণ তত্ত্বের ব্যাখা দিয়ে স্টিফেন হকিং বর্তমান সময়ের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর স্থান দখল করে আছেন।

    আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং বোর-হাইজেনবার্গের কোয়ান্টাম তত্ত্বকে মিলিয়ে দেয়াকে হকিংয়ের অন্যতম সেরা কাজ বলা হয়ে থাকে।

    বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মতে, হকিং আইনস্টাইনের তত্ত্বকে আরও অনেক বেশি সমৃদ্ধ করে ভিন্ন আবিষ্কারের দিকে নিয়ে গেছেন। আইনস্টাইন ১৯১৬ সালে তার সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের মাধ্যমে প্রথম কৃষ্ণবিবরের উপস্থিতির তাত্ত্বিক অনুমান তুলে ধরেন। বলেন, কৃষ্ণবিবর এমন এক জিনিস, যার তীব্র মাধ্যাকর্ষণ বল থেকে আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না।

    আর এর প্রায় ৫০ বছর পর পদার্থবিদ্যা নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা শুরু করেন হকিং। তারপরও তিনিই সর্বোৎকৃষ্ট ব্যাখ্যা দেন কৃষ্ণবিবরের। দাবি করেন, আইনস্টাইনের কৃষ্ণবিবর ও এর ‘ইভেন্ট হরাইজন’ বিষয়ক তত্ত্বে ত্রুটি আছে।

    আপেক্ষিকতার তত্ত্ব কাজ করে মহাজগতের অতিকায় বস্তু নিয়ে, আর কোয়ান্টাম তত্ত্বের কাজ হচ্ছে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জগতকে নিয়ে। হকিং কৃষ্ণবিবরের ঘটনা দিগন্তের ঠিক বাইরে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্বের প্রয়োগ করলেন। অনিশ্চয়তা তত্ত্ব আবার কোনো শূন্যস্থানে বিশ্বাস করে না। এই তত্ত্ব দিয়ে প্রমাণ হয় যে, মহাশূন্যের কোনোটাই শূন্য নয়। সেখানে সব সময় কণা-প্রতিকণার তৈরি হচ্ছে আর সেগুলো প্রতিমুহূর্তে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে বিলীন হচ্ছে।

    হকিং তার তত্ত্বের মাধ্যমে দেখালেন, ঘটনাদিগন্তে কৃষ্ণবিবরের আকর্ষণে এ রকম জোড়া কণার কোনো কোনোটি আটকা পড়ে যেতে পারে। তখন তার সঙ্গী জোড়াটি আর বিমূর্ত থাকে না অর্থাৎ সে মূর্ত হয়ে ওঠে। আর এই মূর্ত হওয়ার ভরটি সে কৃষ্ণবিবর থেকে সংগ্রহ করে নেয়। এর অর্থ দাঁড়ায়, কৃষ্ণবিবর আর কৃষ্ণ থাকছে না। অনবরত সেখান থেকে আলোর গতিতে বের হয়ে আসছে কণা স্রোত। হকিংয়ের নামানুসারে এই কণাস্রোতের নাম দেয়া হয়েছে হকিং বিকিরণ।

    ১৯৮৮ সালে ‘অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইয়ের কারণে স্টিফেন হকিং বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। বইটিতে তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে তত্ত্ব দেন। আন্তর্জাতিকভাবে বেস্ট সেলার হিসেবে বইটির কয়েক কোটি কপি বিক্রি হয়। মহাবিশ্ব নিয়ে প্রকাশিত তার সর্বশেষ বই ‘দ্য গ্র্যান্ড ডিজাইন’।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close