• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

বিশ্বের ’স্বৈরতান্ত্রিক’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

প্রকাশ:  ২৪ মার্চ ২০১৮, ০২:২২ | আপডেট : ২৪ মার্চ ২০১৮, ০২:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের নতুন পাঁচটি স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান বেরটেলসমান স্টিফটুং। এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করে, বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে এখন গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদন্ড পর্যন্ত মানা হচ্ছে না।

বিশ্বের ১২৯ টি দেশে গণতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি এবং সুশাসনের অবস্থা নিয়ে এক সমীক্ষার পর জার্মান প্রতিষ্ঠান 'বেরটেলসম্যান স্টিফটুং' তাদের এই প্রতিবেদনেটি শুক্রবার প্রকাশ করে। এতে বিশ্বের ১২৯ টি দেশের মধ্যে ৫৮টি দেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং ৭১ টি দেশকে গণতান্ত্রিক বলে অাখ্যায়িত করা হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর

    ১২৯টি দেশের গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে যে সূচক এই সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের অবস্থান ৮০ নম্বরে। একই অবস্থানে আছে রাশিয়া। সূচকের শীর্ষে রয়েছে উরুগুয়ে, এস্তোনিয়া এবং তাইওয়ান আছে আর তলানিতে রয়েছে সোমালিয়া, ইয়েমেন এবং সিরিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান অবশ্য বাংলাদেশের নীচে - ৯৮ নম্বরে। মিয়ানমারের অবস্থান ১০৪ নম্বরে। অন্যদিকে ভারত আছে বেশ উপরের দিকে - ২৪ নম্বরে। শ্রীলংকার অবস্থান ৪১ নম্বরে।

    ২০০৬ সাল থেকে জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'বেরটেলসম্যান স্টিফটুং' নিয়মিতভাবে এ ধরণের রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে। তবে তাদের এই সমীক্ষায় উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, জাপান, অস্ট্রেলিয়া সহ পরিণত গণতন্ত্রের দেশগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে।। ২০১৬ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিশ্বের ৭৪টি দেশে গণতান্ত্রিক এবং ৫৫টি দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চলছে।

    চলতি বছরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে গত ১২ বছরের মধ্যে গণতন্ত্র এবং সুশাসনের অবস্থা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এক সময় বিশ্বের যেসব দেশকে মুক্ত বলে ভাবা হতো, সেসব দেশের সরকারও ক্রমশ কর্তৃত্বপরায়ন হয়ে উঠছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর মোট ১৩টি দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। এই তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও আছে মোজাম্বিক. তুরস্ক ও ইয়েমেনের মতো দেশ। আর এই ১৩টি দেশের মধ্যে ৫টি দেশে গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ডও পূরণ হচ্ছে না। এই পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, লেবানন, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া ও উগান্ডা। এই দেশগুলোতে বছর–পরিক্রমায় গণতন্ত্রের ভিত ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে এই দেশগুলোকে ‘একনায়কতান্ত্রিক শাসনে’ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বেশির ভাগ সময় এসব দেশে নির্বাচনের মান দুর্বল থাকায় ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।

    এই সূচক অনুযায়ী, বুরকিনা ফাসো ও শ্রীলঙ্কা লক্ষণীয় উন্নতি সাধন করেছে। এ দুটি দেশকে নতুন গণতন্ত্রের দেশ বলা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশকে নতুন একনায়কতন্ত্রিক দেশ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, খারাপ মানের নির্বাচনের কারণে বাংলাদেশকে এই তালিকায় ঢোকানো হয়েছে।

    জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, অর্থনৈতিকভাবে ভালোই উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য–ঘাটতিও আগের তুলনায় কমে এসেছে। তবে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দেশের স্নাতক পাস করা তরুণদের ৪৭ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পান না। যোগ্যতার চেয়ে নিম্নমানের চাকরিতে শিক্ষিত তরুণদের যোগদান বাংলাদেশের একটি অন্যতম সমস্যা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

    বেরটেলসমান স্টিফটুংয়ের প্রতিবেদনে দেওয়া সূচকে গণতন্ত্রের মানের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে উরুগুয়ে। দুইয়ে আছে এস্তোনিয়া। আর তালিকার তিন নম্বরে আছে তাইওয়ান। বাংলাদেশ আছে ৮০ নম্বরে। রাশিয়া আছে ৮১ নম্বরে। তালিকার ২৪ নম্বরে আছে ভারত, ভুটান আছে ৪০ ও শ্রীলঙ্কা আছে ৪২ নম্বরে। তালিকার ১০৯ নম্বরে আছে চীন। আর এই সূচকের শেষ তিনটি স্থান যথাক্রমে ইয়েমেন, সিরিয়া ও সোমালিয়ার দখলে।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close