‘মুসলিম বিশ্ব একসঙ্গে কাজ করলে ভালো অবস্থানে পৌঁছানো সহজ হতো’

সব মুসলিম দেশ একসঙ্গে কাজ করলে ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবসহ মুসলিমদের জন্য আরো ভালো অবস্থানে পৌঁছানো এবং অগ্রগামী হওয়া সহজ হতো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক যে ফোরামে কথা বলেছেন, সেখানেই ফিলিস্তিনিদের জন্য তার কণ্ঠ সোচ্চার ছিল, দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রতিটি জায়গায় এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। কারণ, ফিলিস্তিনিরা আরব ভূখণ্ডে তাদের জায়গা তারা পাবে, এটা তাদের অধিকার। এই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।

১৯৭৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আরব ভাইদের ওপর যে নিদারুণ অবিচার হয়েছে। অবশ্যই তার অবসান ঘটাতে হবে। অন্যায়ভাবে দখল করা আরব ভূমি অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে। জেরুজালেমের ওপর আমাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জেরুজালেমে মুসলমানদের যে অধিকার, এটা প্রতিষ্ঠা করার কথা জাতির পিতা তার বক্তব্যে বলেন।

শেখ হাসিনা ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নিজেকে একমাত্র বোন (সরকারপ্রধান) হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার এখানে একটাই কথা, সকলে এক হন এবং এ ধরনের অন্যায়-অবিচার যেন আমাদের ওপর না হয়, সেজন্য সকলেই লক্ষ রাখবেন।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আপনারা দেখছেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। সেখানে নারী ও ছোট ছোট শিশুদেরকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। তাদের জন্য, বাংলাদেশের জন্য ও সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য আপনারা (হজযাত্রী) দোয়া করবেন।

তিনি হজযাত্রীদের কাছে দেশ ও জাতির জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, সরকার হাজিদের জন্য যে সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত হজ ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছে, সেটা ধরে রেখে যেন এটাকে আরো উন্নত করতে পারে, সে দোয়াটা আপনারা করবেন আর দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের মানুষের জন্য গোলা ভরা ধান দেন, পুকুর ভরা মাছ দেন, সুন্দর-উন্নত জীবন দেন, সেই দোয়া করবেন।’

সরকার হজ ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান বক্তৃতা করেন।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। দুজন হজযাত্রী তাদের অভিব্যক্তিও ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা হয়। শেষে দেশ-জাতি ও হজযাত্রীদের সার্বিক মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এ বছর মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন বাংলাদেশি হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫৬২ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮০ হাজার ৬৯৫ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের নিয়ে হজ ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩৩০১ বিমানটি ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবে।