• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রোহিঙ্গা গণহত্যা মিয়ানমারের পূর্বপরিকল্পিত: ফোর্টিফাই

প্রকাশ:  ২০ জুলাই ২০১৮, ১৯:৪৪ | আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৮, ১৯:৫৮
রবিউল কমল

ব্যাংককের মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক হামলা ও গণহত্যা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের পূর্ব পরিকল্পিত এবং সাজানো। বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সংস্থাটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর যে হামলা করা হয় তার আগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

প্রতিবেদন জানান, রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য সংস্থাটি যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পেয়েছে। তারা এই গণহত্যায় মিয়ানমারের ২২ সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছে। যাদের নির্দেশে এই গণহত্যা চালানো হয়েছে।

সংস্থাটি এই রিপোর্টকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তুলে ধরার জন্য জাতিসংঘের মহসচিবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ফোর্টি রাইটসের প্রধান নির্বাহী ম্যাথু বলেন, গণহত্যা কখনোই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটতে পারে না। এই ধরনের গণহত্যা ভবিষ্যতে আক্রমণের পথ প্রস্তুত করবে। তাই বিশ্বকে বসে থাকলে চলবে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা আরও গণহত্যা চালাবে, বর্তমানে তাই ঘটছে।

রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই গণহত্যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ২৭টি ব্যাটলিয়নের ১১ হাজার সেনা, পুলিশের ৩ ইউনিটের ৯০০ পুলিশ জড়িত।

২১ মাসের তদন্ত শেষে এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়। এটি তৈরি করতে প্রায় ২৫৪ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ছিলেন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী, বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গা, মায়ানমারের সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তা, বাংলাদেশেরে সামরিক ও সরকারি কর্মকর্তা এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এর সদস্যরা।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়। এরপর বাংলাদেশে প্রায় ৭৫০,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। যার বেশিরভাগই শিশু ও নারী।

এদেকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ২৫ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সময়ের মধ্যে রাখাইন রাজ্যে কমপক্ষে ৯ হাজার রোহিঙ্গাদের হত্যা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, রাখাইনের সহিংসতায় ৭১.৭ শতাংশ বা ৬৭০০ রোহিঙ্গা হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই প্রতিবেদনে ৫ বছরের কম বয়সী ৭৩০ জন শিশুকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী রোহিঙ্গা একটি নিপীড়িত জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সাল থেকে তাদের উপর সহিংসতা শুরু হয়। সে বছরই কয়েক ডজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয় বলেও জানায় জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের উপর যে ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে তা ইতিহাসে সত্যিই বিরল। এই নির্যাতন থেকে বাদ পড়েনি শিশুরাও। যা মানবতাবিরোধী অপরাধের আইন লঙ্ঘন করেছে।

সূত্র: আনাদলু

ফোর্টি রাইটস,মানবাধিকার সংস্থা,ব্যাংকক,মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close