• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রনাঙ্গনে শহীদ হয়েছেন ছাত্রলীগের ১৭ হাজার সৈনিক

প্রকাশ:  ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ০০:১৩
আদনান পারভেজ প্রধান

আজ ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালির জীবনের পরম আনন্দের দিন। স্বাধীন আকাশে মুক্ত পাখির মত উড়ে বেড়ানোর দিন।

১৯৭১ সালের এই দিন বিকেলে রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি সৈন্যরা মাথা নিচু করে যে অস্ত্র দিয়ে দীর্ঘ ৯ মাস বাঙালির রক্ত ঝড়িয়েছে তা যৌথ কমান্ডের কাছে সমর্পন করেন। অস্ত্র পায়ের কাছে নামিয়ে এক রাশ হতাশা ও অপমানের গ্লানি নিয়ে বাঙালির কাছে সেদিন পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল পাকবাহিনী।

সম্পর্কিত খবর

    মাতৃভূমির কপালে বিজয়ের লাল টিপ পড়াতে লাখো শহীদ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, হাজারো মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। এই দিনে বিজয়ের আনন্দ উদযাপনের পাশাপাশি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

    এদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও রাজনীতিক তথা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল নেতৃত্বদেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালিকে তিনি স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুলেছিলেন। তাঁর জাদুকরী নেতৃত্ব ছাড়া বিজয়ের কথা ভাবা যায় না। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একই লক্ষ্যে অবিচল একদল রাজনীতিক নেতা। তাদের সবাইকে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “ছাত্রলীগের ইতিহাস, বাঙালির ইতিহাস।”তিনি আরও বলেছেন, “নেতার মৃত্যু হতে পারে কিন্তু সংগঠন বেঁচে থাকলে আদর্শের মৃত্যু হতে পারে না।”বঙ্গবন্ধুর ডাকে ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ওইদিন যুদ্ধের ময়দানে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। রনাঙ্গনে শহীদ হয়েছেন ছাত্রলীগের ১৭ হাজার বীর সৈনিক।

    ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার আন্দোলনে ছাত্রলীগ আপোসহীণ অবস্থান তৈরী করেছিল। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল অনবদ্য। ছাত্রলীগই প্রথম বাংলা ভাষার জন্য ১০ দফা দাবিনামা পেশ করেন। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ ও আন্দোলন জোরালো করার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় নিশান উড়ানোর নেপথ্যের কারিগরও ছাত্রলীগ। ১৯৫৬ সালের বাংলা ভাষার রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়, ১৯৫৭ সালের শিক্ষক ধর্মঘট এবং ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনের পালে সমীরন প্রবাহ করে ছাত্রলীগ। বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক ‘ছয় দফা’ আন্দোলনে রাজপথের প্রথম সারিতে অবস্থান ছিল ছাত্রলীগের। এসময় নিজেদের ১১ দফার মাধ্যমে ছাত্রসমাজের রক্তে প্রবাহ সঞ্চার করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ছয় দফা ভেঙে এক দফার গণভোটে রূপ দেন।

    ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ কালপর্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিলো অগ্রগণ্য। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারে সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশ আবার কালো মেঘ গ্রাস করে নেয়।

    মহান বিজয়ের ৪৭ বছর পূর্ণ হলো আজ। এসময়ে অনেক চরাই উৎরাই পেরিয়েছে জাতি। বিলম্বে হলেও জাতির গণতান্ত্রিক অগ্রসেনানী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জাতির পিতার খুনিদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হয়েছে মানবতাবিরোধী যুদ্বাপরাধীদের বিচার। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে হার না মানা বাঙালি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ক্রীড়াতেও উড়াচ্ছে বিজয় নিশান।

    ১৯৭১ সালে বাঙালির বীর সন্তানরা যে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বুকের তাজা রক্ত বাংলার শ্যামল মাটিতে ঢেলে দিয়েছিল। আসুন আজকের এই মহান দিনে সেই স্বপ্নপূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। সবার লড়াই হোক সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারন ও লালন করে সকল অশুভ শক্তিকে পেছনে ফেলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে দেশ গড়ার প্রত্যয় গড়ি। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারন সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

    লেখক : গণযোগাযোগ উন্নয়ন সম্পাদক গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগ।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close