• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সিরিয়ায় আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে ছায়াযুদ্ধ

প্রকাশ:  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৮:৩৮ | আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৮:৫৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ও ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ সিরিয়া। ২০১০ সালে তিউনিসিয়ার ফুটপাতের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ বাওয়াজিজি নিজের গায়ে আগুন জ্বেলে আত্মহত্যা করে আরব বসন্তের সূচনা করলে তার ছোয়া লাগে মিসর, সিরিয়া,বাহরাইন, লিবিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশগুলোতে।

সিরিয়ার প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হাফিয আল-আসাদ পাঁচবার গণভোটে বিজয়ের মাধ্যমে সিরিয়া নিজের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। তার ছেলে ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদও ২০০০ সালে এক গণভোটে সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন। সিরিয়ার রাজনীতি ও অর্থনীতি মূলত রাষ্ট্রপতি ও তার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।

সম্পর্কিত খবর

    ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় বাশার সরকারের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ এখনো চলছে। সে থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের মাঝখানে জন্ম লাভ করে আইএস নামক সন্ত্রাসী জঙ্গী গোষ্ঠীর। সিরিয়া ও ইরাকের বেশ কিছু অংশ দখল করে আইএস ওই অঞ্চলে একটি স্বাধীন দেশ গঠনের ঘোষনা দেয়।এর পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের অভিযোগে সিরিয়া ও ইরাকের ওই অংশটিতে বিমান হামলা চালায় মার্কিন ও রুশ বোমারু বাহিনী।ক্রমাগত বিমান হামলার মুখে আইএস সিরিয়া থেকে উচ্ছেদ হলেও এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলায় এই জঙ্গী গোষ্ঠীর তৎপরতা লক্ষণীয়।কথিত আছে আমেরিকার মত বিশ্ব নেতৃত্বদানকারী দেশগুলোই আইএসকে যুদ্ধাস্ত্র সরবারহ করে থাকে।

    সিরিয়া থেকে আইএস বিদায় নিলেও আফরিন অঞ্চলে শুরু হওয়া সংঘাতে নতুন ক্রীড়ানকরূপে আবির্ভূত হয়েছে আমেরিকার মিত্র কুর্দি জঙ্গীগোষ্ঠী ওয়াইপিজি।কুর্দিস্থান ওয়ার্কার্স পার্টি পিকেকের অংশ এই জঙ্গীগোষ্ঠীটি সিরিয়ার সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র তুরস্কে নিষিদ্ধ।তাই তুরস্কের সীমান্তবর্তী অঞ্চল আফরিনে হামলা চালিয়ে সেখান থেকে ওয়াইপিজিকে হটিয়ে দিয়েছে তুরস্ক।তুরস্ক সন্দেহ করছে তাদের দেশে সন্ত্রাসী হামলায় পিকেকের মদদ রয়েছে এবং তারা বলছে আফরিন অঞ্চলকে সন্ত্রাসীদের প্রবেশপথ হতে দেবে না এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন তুরস্ক।তুরস্ক সন্দেহ করছিলো আমেরিকার সহযোগিতায় তুরস্ক,সিরিয়া ও ইরাকের অংশবিশেষ নিয়ে সেখানে আইএসের মতো একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে পারে এই কুর্দি জঙ্গীগোষ্ঠীটি।

    সিরিয়ায় আমেরিকার স্বার্থঃ

    আমেরিকার মূল লক্ষ্য সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে উৎখাত করা।আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের মতে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া পুনর্গঠনের জন্যে প্রয়োজন ২০০ মিলিয়ন ডলার।আমেরিকা চায় সিরিয়া পুনর্গঠনের এই কাজগুলো তার দেশীয় কোম্পানিগুলো যাতে পায়।উল্লেখ্য ইরাক পুণর্গঠনের কাজগুলোও আমেরিকান কোম্পানিগুলোই পেয়েছিলো।আমেরিকা বলছে তারা সিরিয়া পুনর্গঠনে রাজি তবে আসাদ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নয়।

    সিরিয়ায় রাশিয়ার স্বার্থ:

    সিরিয়ায় আসাদ সরকার মুলত রাশিয়ার সমর্থনের কারণেই এখনো ঠিকে আছে।রাশিয়া তার মিত্রদেশ হিসেবে সিরিয়ায় আসাদের সরকারকে ক্ষমতায় চায়।আসাদের সরকার ক্ষমতায় থাকলে এই অঞ্চলে রাশিয়া তার প্রভাব বজায় রাখতে পারবে।আবার আরব অঞ্চলে প্রভাবশালী ইরানও আসাদ সরকারকে সমর্থন করে আসছে।সম্প্রতি বেশ কিছুদিন থেকেই রাশিয়ার সাথে সুসম্পর্কের পথেই হাঁটছে ইরান।

    সবশেষ আসাদ বিরোধী সরকারি বাহিনীর হামলায় প্রায় ৫০০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন যাদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারন নাগরিক।হাসপাতাল রাস্তাঘাট গুলোও রেহাই পাচ্ছে না বোমা বিস্ফোরণের হাত থেকে ।সাধারন নাগরিকেরা বলছেন বৃষ্টির মতো বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।গতকাল সরকারি বাহিনীর হামলায় নিহত এক শিশুর মা বলেন“আমার সন্তান বেহেশতে যাচ্ছে,দুনিয়াতে সে খাবার পায়নি, বেহেশতে নিশ্চয়ই তার জন্যে অনেক খাবার থাকবে।”

    /টিএস

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close