• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রোহিঙ্গা শিশুর পেটে প্যাকেট ইয়াবা!

প্রকাশ:  ২৯ মে ২০১৮, ১৬:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছোট ছোট প্যাকেট। প্রতিটি প্যাকেটে ৫০টি করে ইয়াবা। এসব প্যাকেট পানি দিয়ে গিলে খাওয়ানো হতো আফসার বাবুল নামের এক রোহিঙ্গা শিশুকে। এরপর ১২ বছরের এই শিশুকে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ঢাকায় আনা হতো। ঢাকায় আনার পর তাকে সিরাপ খাইয়ে পায়ুপথ দিয়ে বের করা হতো ইয়াবার প্যাকেট। পরে এসব ইয়াবা ঢাকার মাদকসম্রাটদের কাছে বিক্রি করা হয়।

গত রোববার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে শিশু আফসার, তার চাচাসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এরপর আফসার ও তার চাচার পেট থেকে বের হয় ইয়াবার অনেকগুলো প্যাকেট। সেখানে সাড়ে তিন হাজার ইয়াবা ছিল। আটককৃতরা হলেন- রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লা ও তার ভাতিজা আফছার ওরফে বাবুল (১২), মামুন শেখ, শরিফুল, ফাহিম সরকার ও রাজিব হোসেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য।

দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, গোয়েন্দা তথ্য যাচাই করে প্রথমে মামুন শেখকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর শিশুসহ দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে পেটে ইয়াবা পাওয়া যায়। মামুনের সহযোগী টেকনাফে অবস্থানরত পলাতক রেজোয়ান। সেই মূলত পেটের ভেতর ইয়াবা ভরে রোহিঙ্গাদের ঢাকায় মামুনের কাছে পাঠায়।

অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য্য জানান, মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার হওয়ার পর একটি চক্র পাকস্থলীতে ভরে ইয়াবা আনছিল। এ কাজে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা ধারণা করছেন, গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গা শিশু বাবুল ও তার চাচা সেলিম ছাড়াও এই কাজে আরও অনেক রোহিঙ্গাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে।

রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লা জানিয়েছেন, রেজোয়ানের সঙ্গে তাদের কক্সবাজারে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে সে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে টাকার প্রলোভন দেয় তাকে। তার শেখানো কৌশলে পেটে ভরে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় আসতেন তিনি। এ কাজে তার শিশু ভাতিজাকেও ব্যবহার শুরু করেন।

সেলিম জানান, তিনি ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে তৈরি প্রতিটি ক্যাপসুলের ৭০টি পানি দিয়ে গিলে খেতেন। তার ভাতিজা এ ধরনের ৩০টি ক্যাপসুল খেত। এভাবে তারা প্রতিমাসে তিন থেকে চারবার টেকনাফ থেকে বাসে বা ট্রেনে ঢাকায় আসতেন। পথে কোথাও তারা পানি বা অন্য কিছু খেতেন না এবং প্রকৃতির ডাকেও সাড়া দিতেন না।

ডিবির উত্তর বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান জানান, পাকস্থলীতে ইয়াবা বহনকারী ওই দুই রোহিঙ্গা ঢাকায় আসার পর তাদের গরম দুধ বা মিল্ক্ক অব ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় ওষুধ সেবন করানো হতো। এরপর পাকস্থলীতে থাকা ইয়াবা বের করত মামুন শেখ। রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লা প্রতি চালানে পলাতক রেজোয়ানের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ও শিশু বাবুল ১০ হাজার টাকা পেত।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, পলাতক রেজোয়ান কক্সবাজারে দীর্ঘদিন ধরে উখিয়ার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ অন্যান্য ক্যাম্পে অবস্থানরত অসহায় ও দরিদ্র রোহিঙ্গাদের ইয়াবা বহনে ব্যবহার করত। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

রোহিঙ্গা,শিশুর পেটে,প্যাকেট ইয়াবা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close