• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘ভাই রে বলে চিৎকার করেছি’

প্রকাশ:  ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৪৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

যখন তুমি এসেছিলে ভবে, কেঁদেছিলে তুমি হেসেছিলো সবে। এমন জীবন তুমি করিবে গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন”

জাতিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতার পঙক্তিগুলো অাম্মা সবসময়ই অামাদের বলতেন। অামরা শুধু শুনেই গেলাম। অথচ তানিম হেসে গেলো অার অামরা কেদেঁ পৃথিবী থেকে তাকে বিদায় দিলাম।

সম্পর্কিত খবর

    অাম্মার পৃথিবীর সবচেয়ে অাদরের ধন ছিলো সে। যার কারনে খুব জেলাস হতাম অার ওর সাথে ঝগড়া লেগেই থাকতো অামার। কিছু বলতে চাইলে শুনার অাগ্রহ থাকলেও শুনতাম নাহ। চা করে অানতে বললে শুনতামই তো না উল্টো ঝারি দিয়ে বসতাম।

    ক্যাম্পাসে দূর থেকে দেখলেই অামার দিকে এমনভাবে তাকাতো মনে হতো কি একটা অপরাধ করে ফেলছি অার সেটা সে বুঝতে পেরে সে রাগে দূর থেকেই গিলে ফেলছে অামাকে।কাছে গেলে অাবার ধারণা পাল্টে যেতো।

    বাড়িতে অাসলে যে জ্বালাতো অামাকে সেটা সবার কাছে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।কখনো চুলে টান দিতো, কখনো পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতো, কখনো বা বাচ্চা বিড়ালটাকে ধরে অামার উপর ফেলে দিতো।

    চিৎকার চ্যাঁচামেচি করতাম অামি, অাম্মার কাছে গিয়েও যতোটুকু না ততোটুকু লাগিয়ে বলতাম। অাম্মা খুব বকা দিতেন। খুশিতে তার সামনে এসে শয়তানের হাসি হাসতাম অামি।

    তার অনেক ইচ্ছে ছিলো অামার কাছ থেকে “ভাই” ডাক শুনার। ইচ্ছে পূরন করেছিও বটে, তবে সাদা কাফন পড়ে অাসা কলিজার ভাইটার লাশকে অনেকবার “অামার ভাই”,”ভাই রে” বলে চিৎকার করেছি। রেসপন্স করে নাই !

    অাজ সে নেই ! অথচ কি না তার ঝগড়া করা, বকা দেওয়া, চুলে টান দেওয়া,পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়াটাই সবচেয়ে বেশিই মিস করছি…এমনটাতো তো হওয়ার ছিলো নাহ।

    কি এমন দোষ করেছিলো সে যে তাকে তার মায়ের বুক খালি করে নিয়ে যেতেই হলো তোমাদের? দোয়া করি তোমরা সুখি থাকো তোমাদের মা অার ভাইকে নিয়ে। ভালোবাসা, খুনসুটি নিয়েই ভাইবোনের বন্ধন অটুট থাকুক অাজীবন।

    শুধু খেয়াল রাখবা ভাইদের, তোমাদের মায়ের যাতে তানিমের মায়ের মতো গভীর রাতে কিংবা দিনের শেষটাতে ফুপিয়ে কাদঁতে না হয়, ছেলে হারিয়ে বাবাকে যেন অসহ্য যন্ত্রণা অার বুক ভরা হাহাকার নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে না হয়।

    সুখি হও তোমরা, অনেক সুখি হও…

    ফেসবুক থেকে সংগ্রহ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close