• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

আল-কায়েদার ভারতে হামলার হুমকি

প্রকাশ:  ০৮ জুন ২০২২, ২৩:৪৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মহানবীকে অসম্মান করায় ভারতীয় উপমহাদেশে কার্যক্রম চালানো আল-কায়েদার (একিউআইএস) পক্ষ থেকে হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে যে বিজেপির দু’নেতা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে অসম্মান করে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছে, তাই তাদের সদস্যরা ভারতে হামলা চালাবে।

এক বিবৃতিতে একিউআইএস বলেছে, ‘মহানবীকে এমন অপমানের প্রতিক্রিয়ায়, সারা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ হৃদয় এখন প্রতিশোধের অনুভূতিতে পরিপূর্ণ।’

এরপর সংগঠনটি দিল্লি, মুম্বাই, উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাটে আত্মঘাতী হামলার হুমকি দেয়। ৬ জুন আল কায়দার তরফে প্রকাশ করা বিবৃতিতে এমন মন্তব্যকে ‘নবীর মর্যাদা রক্ষার লড়াই’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই বার্তায় ‘আল কায়দা ফর সাব কন্টিনেন্ট’ লিখেছে– ‘দিল্লি, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ ও মুম্বাইতে যে ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদী’রা রয়েছে তারা এখন মৃত্যুর প্রতীক্ষা করুক। বাড়িতে বা সেনাঘাঁটিতে লুকিয়ে রক্ষা পাবে না। আল-কায়দার যোদ্ধারা নিজেদের ও শিশুদের শরীরে বিস্ফোরক বেঁধে হামলা চালাবে।’ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ হুমকি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।’

এদিকে বিজেপির নূপুর শর্মার ইসলামবিরোধী মন্তব্যের জন্য ভারতের অন্যান্য অংশে বিক্ষিপ্ত অস্থিরতার খবর পাওয়া গেছে। মহানবীকে এমন অপমানের উপসাগরীয় দেশ কাতার, কুয়েত, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইনের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, মালদ্বীপ, জর্ডান ও লিবিয়ার পক্ষ থেকে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। কুয়েতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইরান, কুয়েত ও কাতার ওই ঘটনায় নিন্দা জানাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। সৌদি আরব কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে।

উপসাগরীয় ও এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এ মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় ভারতীয় কূটনীতিকরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও ঝড়ের যে আরও অনেকখানি বাকি তা টের পাওয়া যাচ্ছে।

ভারতীয় মুসলিম সংগঠনের নেতারা বলেছেন, প্রথমবারের মতো প্রভাবশালী বিদেশী নেতারা সংখ্যালঘু (মুসলিম) সম্প্রদায়ের লাঞ্ছনার বিষয়ে কথা বলেছেন।

মুম্বাই শহরে মুসলমানদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রধান আলি আসগর মোহাম্মদ বলেন, ‘বিশ্ব নেতারা অবশেষে আমাদের (মুসলিমদের) কণ্ঠস্বরের আওয়াজ শুনছেন। একমাত্র তারাই পারেন মোদি সরকার ও তার দলকে মুসলিমবিরোধী কার্যকলাপ থেকে দূরে রাখতে।’

মোদির বিজেপি সরকারের অধীনে ভারতের মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন থেকে শুরু করে হিজাব (মাথার স্কার্ফ) পরার বিষয়েও বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। দেশটিতে ২০১৯ ও ২০২০ সালের ভয়াবহ দাঙ্গার পরে সম্প্রতি ধর্মীয় মিছিলের সময় হিন্দু-মুসলিম সংঘর্ষ হয়েছে।

যদিও বিজেপি মোদির শাসনামলে কোনো সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধির কথা অস্বীকার করেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের এ দলটি বিভিন্ন কট্টরপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীগুলোকে তাদের বিশ্বাস রক্ষা করার জন্য উৎসাহিত করছে। এ সময় মুসলিমবিরোধী মনোভাবও চাঙ্গা হয়েছে।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভারতে ২০২১ সালজুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন, হামলা, হত্যা, এবং হুমকি দেয়ার মতো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

পূর্ব পশ্চিম/ম

মোদি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close