দক্ষিণ আফ্রিকায় আরব বসন্তের আভাস
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট থাবো এমবেকি ক্ষমতাসীন সিরিল রামাফোসার সমালোচনা করে আরব বসন্তের অনুরূপ পরিস্খিতির ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন।
সম্পর্কিত খবর
১৭ জুলাই প্রয়াত আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) নেতা জেসি ডুয়ার্টের স্মরণসভায় বৃহস্পতিবার রাতে এমবেকি রামাফোসা সরকারের বিষয়ে এ বিরল প্রতিক্রিয়া জানান।
স্মরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এমবেকি বলেন, ‘দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং বৈষম্যের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য কোনো জাতীয় পরিকল্পনা নেই, এর কোনো অস্তিত্ব দেখি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের সেবা করার জন্য আমাদের এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।’
বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে নেলসন ম্যান্ডেলার অনতম সহযোগী এমবেকি প্রেসিডেন্ট রামাফোসাকে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এবং সরকারি দুর্নীতি দমনের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, এটি একটি কোনো ঘটনার মাধমে স্বতঃস্ফূর্ত নাগরিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং ‘আরব বসন্তের আমাদের নিজস্ব সংস্করণকে উস্কে দিতে পারে।’
এমবেকি উল্লেখ করেন, একজন রাস্তার ফেরিওয়ালাকে পুলিশের লাঞ্ছিত করার ঘটনা সারা দেশকে ক্ষুব্ধ করে তিউনিসিয়ায় বিশাল অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল। ‘এর জন্য একটু স্ফুলিঙ্গের প্রয়োজন ছিল’, বলেন তিনি।
এমবেকি বলেন, ‘এরকম কিছু আমাদের এখানেও ঘটতে চলেছে। আপনি এত বেশি লোককে বেকার এবং দরিদ্র রাখতে পারবেন না। একদিন এটি বিদ্রোহের সূত্রপাত করবে।’
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ৩ কোটির বেশি দক্ষিণ আফ্রিকান দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। প্রায় দেড় কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে।
এমবেকি দুর্নীতির ইস্যুটিকেও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নাগরিকরা ‘এএনসি-তে এমন নেতৃত্বের মুখোমুখি হচ্ছে যেখানে তারা একের পর এক ব্যক্তিকে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হতে দেখছে।’
২০১৭ সালে এএনসি নির্বাচনী দৌড়ের আগে সিরিল রামাফোসার মনোনয়ন লাভের প্রচারণায় ‘নতুন ভোর’ ব্যানারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার ওপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জনসাধারণের ধারণা পূর্বসূরি জ্যাকব জুমার চেয়ে রামাফোসার প্রশাসনের অধীনে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা
পূর্বপশ্চিমবিডি/এআই