ইরানের রাস্তায় এবার হিজাবপন্থীরা
পুলিশ হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। প্রতিবাদের সপ্তম দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে অন্তত ৫০টি শহর ও গ্রামে। তাদের দমাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে বিক্ষোভ হয়ে উঠেছে সহিংস, বাড়ছে প্রাণহানি।
বল প্রয়োগ করে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে এবার পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে দেশটির সরকার। ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে শুক্রবার বিক্ষোভ করে হিজাবপন্থিরা। মিছিল থেকে তারা ‘দাঙ্গাকারীদের’ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আহ্বান জানায়।
সম্পর্কিত খবর
মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদ ও পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভকারীদের ‘ইসরায়েলের সেনা’ হিসেবে অবিহিত করছে হিজাবপন্থিরা। তাদের বিক্ষোভটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে।
‘ইসরায়েল নিপাত যাক’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘কোরআনের অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা উচিত’- স্লোগানে তেহরানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর প্রদক্ষিণ করে সরকারপন্থিদের মিছিল।
মাহসা আমিনিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে ধরা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সঠিকভাবে হিজাব করেননি তিনি।
পুলিশ হেফাজতে মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, একসময় চলে যান কোমায়। হাসপাতালে ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়েছে।
মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই উত্তাল ইরান। ফেসবুক ও টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর।
এদিকে বিক্ষোভ শুরুর পর শুক্রবার প্রথম সরকারের তরফ থেকে বিক্ষোভকারীদের কঠিন বার্তা দিয়েছে সেনাবাহিনী। বলেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিতে তারা শত্রুদের মোকাবিলা করবে।
‘ইসলামি শাসনকে দুর্বল করার এই মরিয়া কর্মকাণ্ড শত্রুদের অশুভ কৌশলের অংশ।’
সামরিক বাহিনী বলছে, অন্যায়ভাবে লাঞ্ছিত মানুষদের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করতে শত্রুদের চক্রান্তগুলো নস্যাৎ করা হবে।