হাসপাতালে ভর্তি অসংখ্য ফিলিস্তিনি
হাতে-পায়ে অসংখ্য কাটা-ছেঁড়া দাগ। ট্রাউজারে জমাট বাঁধা রক্তের দাগ। ফোলা পায়ে ব্যান্ডেজ। ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। তীব্র ব্যথায় ছটফট করছেন একজন। ইসরাইলের নির্যাতন থেকে মুক্তির পর এভাবেই গজার আল-নাজ্জার হাসপাতালে করুণ সময় পার করছেন ফিলিস্তিনি বন্দিরা।
সোমবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থল অভিযানের সময় ইসরাইলি কারাগারে আটক করা হয় শ খানেক ফিলিস্তিনিকে।
সম্পর্কিত খবর
মাসের শুরুতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অসংখ্য গাজাবাসীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্তর্বাস ছাড়া কোনো কাপড়ই ছিল না তাদের শরীরে। ট্রাকবোঝাই করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় অজানা স্থানে। অসহায় মানুষের ওপর সেখানেই চলে নির্মম অত্যাচার।
ইসরাইলের এই অমানবীয় ‘টর্চার সেল’ থেকেই মুক্তি পেয়েছেন দুজন গাজাবাসী। কারাগারে থাকা অবস্থায় নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। গাজা শহরের পূর্ব জাইতুন শহরতলিতে আটকদের একজন নায়েফ আলী। তার কবজি এবং শরীরের অন্যান্য অংশে কাটা দেখা যাচ্ছিল।
ভয়ানক সেই সময়ের কথা মনে করে নায়েফ আলী বলেন, ইসরাইলি বাহিনী দুদিন ধরে তাদের হাত বেঁধে রাখে। এমনকি তাদের মারধরও করা হয়। পাশাপাশি তাদের খাওয়া, পান করা এবং টয়লেট ব্যবহার করতেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তাদের এমন এক স্থানে রাখা হয় যেখানে ‘তীব্র ঠান্ডা’ ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের একটি কারাগারে স্থানান্তর করার আগে তারা আমাদের ওপর ঠান্ডা জল ছুড়েছিল। যেখানে নিয়ে আবারও নির্যাতন এবং মারধর করা হয়।’
৫৫ বছর বয়সি খামিস আল-বারদিনিও ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘তারা দিনের বেলা মারধরসহ রাতে আমাদের মাথায় ঠান্ডা পানি ঢেলে দেয়।’ মুক্তি পাওয়া আহত গাজাবাসীকে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের আল-নাজ্জার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল-হামস বলেন, ‘ইসরাইলি হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়া প্রায় ২০ জন পুরুষের শরীরে কালশিটে দাগ এবং আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’ তবে ইসরাইলি বাহিনী বিষয় পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
দাবি প্রত্যাখ্যান করে সেনাবাহিনী বলছে, বন্দিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আচরণ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে অনুসারে আটক করার সময় সন্দেহভাজনদের পর্যাপ্ত খাবার ও পানি দেওয়া হয় এবং প্রোটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।