নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর ধারাবাহিক হামলায় ১৬০ জনের মৃত্যু
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলের প্লাতিয়াউ রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ধারাবাহিক হামলায় অন্তত ১৬০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) প্লাতিয়াউ রাজ্যের স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছেন, নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর চালানো একের পর এক হামলায় এই প্রাণহানি ঘটে।
সম্পর্কিত খবর
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলের অন্যতম একটি রাজ্য প্লাতিয়াউ। অঞ্চলটিতে বেশ কয়েকটি নৃগোষ্ঠীর বসবাস। তারা বিভিন্ন ধর্মের অনুসারি। অনেক বছর ধরেই এলাকাটি ধর্মীয় ও জাতিগত উত্তেজনায় জর্জরিত। সেখানে প্রায়ই পশুপালক ও স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এবারের ঘটনাটি ঘটেছে মুশু গ্রামে। এ বছরের মে মাসে এখানে কৃষকদের সঙ্গে পশুপালকদের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল। তারপর থেকে এবারের ঘটনাটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
গত রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এখন প্রাণহানির সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেল।
রেড ক্রসের হিসাব অনুযায়ী, বোক্কোসের ১৮টি গ্রামে ১০৪ জন এবং বারকিন লাদিতে আরও অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বোক্কোস রাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য ডিকসন চোলোম বারকিন লাদি এলাকার ৫০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
প্লাতিয়াউ রাজ্যের স্থানীয় সরকারের এলাকা বোক্কোসের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মানডে কাসাহ সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) এএফপিকে জানিয়েছিলেন, শনি ও রবিবার বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনায় ১১৩ জন নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, “আক্রমণগুলো সুপরিকল্পিত ছিল। দস্যুরা প্রায় ২০টির মতো সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা এসব সম্প্রদায়ের ১১৩টি মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছি। পাশাপাশি তিন শতাধিক আহতকে উদ্ধার করেছি।”
তবে এ হামলার জন্য কারা দায়ী সেটি সুস্পষ্ট করে বলেননি মানডে কাসাহ। তিনি বলেন, “একাধিক সশস্ত্র গ্যাং, যারা স্থানীয়ভাবে ‘দস্যু’ নামে পরিচিত, তারা কম করে হলেও ২০টি ভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে। তারা লোকজনের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।”
মানডে কাসাহ আরও বলেন, “হামলার ঘটনায় তারা ৩০০ জনের বেশি ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় পেয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের বোকোস, জোস ও বারকিন লাদির হাসপাতালগুলোয় স্থানান্তর করা হয়েছে।”
রাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য ডিকসন চোলোম দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা হামলাকারীদের কাছে নতিস্বীকার করব না। ন্যায়বিচার ও স্থায়ী শান্তির জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ।”