• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

জাতিসংঘের কর্মীদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে হামলার অভিযোগ, আতঙ্কিত মহাসচিব

প্রকাশ:  ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৩৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

গাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সরবরাহকারী জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড নেশনস এজেন্সি ফর প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজিসের (ইউএনআরডব্লিউএ- আনরোয়া) বেশ কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে ইসরায়েলে হামাসের হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) লিখিত বিবৃতিতে এ অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অভিযোগের যথাযথ তদন্ত না হলে আনরোয়া তহবিলে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ বন্ধ থাকবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা অত্যন্ত যন্ত্রণার সঙ্গে জানাচ্ছি যে গত ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে আনরোয়ার অন্তত ১২ জন কর্মীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।”

পরে একই দিন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আনরোয়াতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ এসেছে। আমরা অস্থায়ীভাবে সংস্থাটিতে আর্থিক সহায়তা প্রদান বন্ধ রেখেছি এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আশা করছি সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ এ ইস্যুতে দৃশ্যমান ও যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন।”

এদিকে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) আনরোয়ার কমিশনার জেনারেল (প্রধান নির্বাহী) ফিলিপ লাজারিনি সাংবাদিকদের এই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, সংস্থাটি ইতোমধ্যে অভিযোগ আসা কর্মীদের চাকরিচ্যুত করেছে এবং এ বিষয়ক তদন্ত শুরু করেছে।

লাজারিনি বলেন, “৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামলার সঙ্গে আনরোয়ার কয়েকজন কর্মীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষও কিছু তথ্য আমাদের সরবরাহ করেছে।”

তিনি বলেন, “সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বজায় রাখার স্বার্থে অভিযোগ আসার পর তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে আমি অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। সেই তদন্তও শুরু হয়েছে।”

তবে কতজন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে বা কয়জন কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে এটা বলেননি লাজারিনি। পাশাপাশি, গত ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে এই কর্মীদের কী ধরনের সংশ্লিষ্টতা ছিল, সে সম্পর্কেও কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

এদিকে শুক্রবার গাজায় বেসামরিক লোকজনের হত্যা বন্ধ করতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন বৈশ্বিক আদালত।

ইসরায়েলের সরকারের মুখপাত্র এলন লেভি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এ ব্যাপারে বলেন. “একদিন হয়তো সংবাদমাধ্যমগুলোর হেডলাইন হবে হামাসের সঙ্গে জাতিসংঘ কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেছে ইসরায়েল।”

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। অভিযোগটি শোনার পর থেকে তিনি আতঙ্কিত বোধ করছেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সচিব।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর এক বছর পর ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সরবরাহে আনরোয়া গঠন করে জাতিসংঘ। সংস্থাটির তহবিলের অধিকাংশই সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশ্বের বিভিন্ন ধনী দেশ।

আন্তর্জাতিক,জাতিসংঘ,ইসরায়েল,ফিলিস্তিন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close