• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ভারতে কৃষক বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ

প্রকাশ:  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:১১ | আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ভারতে ফসলের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকের ওপর আবারও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী নয়াদিল্লির প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তরে এক মহাসড়কে কৃষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।

ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) আইনি স্বীকৃতির দাবিতে ভারতের হাজার হাজার কৃষক গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘‘দিল্লি চলো’’ যাত্রা শুরু করে। পুলিশ রাজধানী দিল্লি অভিমুখী কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাজার হাজার কৃষক দিল্লি চলো কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিবাদে ২০২০ সালের নভেম্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন ভারতের কৃষকেরা। সেবার দেড় বছরের বেশি সময় বিক্ষোভ করেন তারা। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে ঢুকে পড়েছিলেন কৃষকেরা। তবে এবার কৃষকদের ঠেকাতে আগে থেকেই তৎপর নরেন্দ্র মোদির সরকার।

এবারও একইভাবে দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে কৃষকরা। সেই যাত্রায় বাধা দিতে একেরপর তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ।

এদিন টিয়ার গ্যাস ছুঁড়লে কৃষকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

পুলিশের পক্ষ থেকে এ হামলা এমন সময়ে ঘটলো যখন মোদি সরকার কৃষকদের দাবি নিয়ে ফের আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা সামাজিক নেটওয়ার্ক এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেন, সরকার সব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

তিনি লেখেন, আমি আবারও কৃষক নেতাদের আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। শান্তি বজায় রাখা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের বলেন, কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তারা আলোচনা করবেন।

কৃষকদের দিল্লি চলো কর্মসূচির প্রথম দিনেই এমএসপির আইনি বৈধতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

‘‘ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রা’’ চলাকালে মঙ্গলবার ছত্তিশগড়ে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাহুল বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে কৃষকদের ফসলের জন্য এমএসপির আইনি নিশ্চয়তা দেবে।

রাহুল বলেন, ‘‘ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রা থেকে কংগ্রেস পাঁচটি ন্যায় বা নিশ্চয়তা ঘোষণা করবে। এমএসপির নিশ্চয়তা তার প্রথম। বিষয়টি আইনি বৈধতা পেলে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাবেন। দেশের ১৫ কোটি কৃষক পরিবার এর ফলে উপকৃত হবে। তাদের জীবন থেকে অনিশ্চয়তা দূর হবে।’’

কৃষকদের এই দিল্লি অভিযানের মূল দাবিগুলোর অন্যতম এমএসপিকে আইনের আওতায় আনা, স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ রূপায়ণ, কৃষিঋণ মওকুফ এবং কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার। ২০২০-২১ সালে কৃষকদের দিল্লি যাত্রার সময়েও এগুলোই ছিল মুখ্য দাবি।

কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের মতো দাবি সেবার মেনে নিলেও এমএসপিকে আইনি বৈধতা দেওয়ার বিষয়টি বিজেপি বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

কৃষক নেতাদের অভিযোগ, দীর্ঘ তিন-চার বছর ধরে সরকার নানা অসিলায় টালবাহানা করে গেছে। কিন্তু দাবি পূরণ করেনি।

দাবিদাওয়া নিয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড়ে কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ও ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। কিন্তু মধ্যরাত পর্যন্ত কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী কৃষকদের ‘‘দিল্লি চলো’’ যাত্রা শুরু হয়।

আন্দোলন,ভারত,কৃষক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close