• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জার্মানিতে বৈধতা পেল গাঁজা, করা যাবে চাষও

প্রকাশ:  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:২৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

জার্মানিতে গাঁজা চাষকে বৈধ ঘোষণা করেছে পার্লামেন্ট। শুক্রবারের (২৩ ফেব্রুয়ারি) এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউরোপের তৃতীয় দেশ হিসেবে গাঁজার বৈধতা দেওয়া দেশ হলো জার্মানি।

এর আগে, মালটা ও লুক্সেমবার্গ গাঁজা চাষকে বৈধ ঘোষণা করেছিল।

এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

নতুন এ আইনের ফলে জার্মানিতে থাকা ১৮ বছরের বেশি নাগরিকরা নির্দিষ্ট পরিমাণ গাঁজা রাখতে পারবেন। তবে গাঁজা কেনা কিছুটা কঠিন করা হয়েছে।

এ আইন আগামী ১ এপ্রিল থেকে বলবৎ হবে। ওই দিন থেকে অনেক জায়গায় প্রকাশ্যে ধূমপানের আকারে গাঁজাসেবন করা যাবে।

আইনে বলা আছে, প্রকাশ্যে ২৫ গ্রাম গাঁজা বহন করা যাবে। আর একটি বাড়িতে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম গাঁজা রাখা যাবে।

বার্লিনের মতো অনেক জায়গায় প্রকাশ্যে গাঁজাসেবন অনেকটাই বৈধ। যদিও বিনোদনের উদ্দেশ্যে মাদক বহন করা অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লটারবাখ বলছেন, “বিদ্যমান আইন সত্ত্বেও অনেক বছর ধরেই জার্মানির তরুণদের মধ্যে গাঁজাসেবন বাড়ছে।”

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগে তুমুল তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে ৪০৭-২২৬ ভোটে গাঁজাকে বৈধতা দেওয়ার আইন পাশ হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য, কালোবাজারকে দমানো, ধূমপায়ীদের ভেজাল গাঁজা থেকে রক্ষা করা এবং সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের আয়ের উৎস কমানো।

গাঁজাকে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে জার্মানিতে অনেক বছর ধরেই তর্ক-বিতর্ক চলছে। চিকিৎসকরা তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

আর রক্ষণশীলরা বলছেন, গাঁজা বহন ও সেবন বৈধ করার ফলে মাদকের ব্যবহার বাড়বে।

রক্ষণশীল বিরোধীদল সিডিইউ-এর সিমোন বোরখার্দ বলেছেন, “চিকিৎসক, পুলিশ ও সাইকোথেরাপিস্টদের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও সরকার একেবারে অপ্রয়োজনীয়, বিভ্রান্তিকর এই আইন পাশ করেছে।”

তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, “গত দশ বছরে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি গাঁজাসেবনকারীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, “এ আইন কালোবাজারকে নির্মূল করবে।”

তবে নতুন আইনেও স্কুল ও খেলার মাঠের মতো এলাকায় গাঁজাসেবন অবৈধই থাকবে। বিশেষ করে কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কাজেই গাঁজা কেনা সহজ হবে না।

প্রথমে পরিকল্পনা ছিল লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান ও ফার্মেসিতে গাঁজা বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু এতে মাদকটির রপ্তানি বেড়ে যেতে পারে বলে ইইউ উদ্বেগ প্রকাশ করলে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

এখন “ক্যানাবিস সোশ্যাল ক্লাবস” নামক অবাণিজ্যিক সদস্যদের ক্লাবগুলো সীমিত পরিমাণে গাঁজা উৎপাদন ও বিপণন করবে।

প্রতি ক্লাবে সর্বোচ্চ ৫০০ জন সদস্য থাকবে। সদস্যপদ পাবেন শুধু জার্মান নাগরিকেরা।

এছাড়া জার্মানির বাসিন্দারা চাইলে বাড়িতেও নির্দিষ্ট পরিমাণ গাঁজা চাষ করতে পারবেন। প্রতি বাড়িতে সর্বোচ্চ তিনটি গাঁজা গাছ চাষ করা যাবে।

অর্থাৎ এখন থেকে জার্মানিতে বেশি পরিমাণে গাঁজা রাখার অনুমতি থাকবে, কিন্তু একইসঙ্গে সেখানে গাঁজা কেনাটাও কঠিন হয়ে যাবে।

আগামী কয়েক বছরে জার্মানি সরকার নতুন আইনের প্রভাব মূল্যায়ন করবে। তারপর লাইসেন্সের মাধ্যমে গাঁজা বিক্রি চালু করবে।

তবে এই আইন নিয়ে তুমুল বিতর্ক রয়েছে। তাই এর ভবিষ্যৎ কিছুই নিশ্চিত নয়।

রক্ষণশীল বিরোধীদল বলছে, আগামী বছর তারা ক্ষমতায় গেলে এ আইন পুরোপুরি বাতিল করবে।

গাঁজা,জার্মানি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close