• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বাংলাদেশসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি :কংগ্রেসের ইশতেহার

প্রকাশ:  ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৪৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য ইশতেহার প্রকাশ করেছে দেশটির ঐতিহ্যবাহী দল ‘‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’’।

শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) ‘‘ন্যায় পত্র’’ নামে এ ইশতেহার প্রকাশ করেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তার পাশে উপস্থিত ছিলেন দলের দুই সাবেক সভাপতি সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী ছাড়াও শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

ইশতেহারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। বাংলাদেশের মতো নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তারা।

ইশতেহারে চলমান গাজা সংঘাত নিয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপির নীতির সমালোচনা করে কংগ্রেস।

এতে বলা হয়, “ভারতের নিকটতম প্রতিবেশীদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেবে কংগ্রেস।”

মল্লিকার্জুন খাড়গে লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমরা নেপাল ও ভুটানের সাথে আমাদের বিশেষ সম্পর্কের প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবো এবং নিজেদের পারস্পরিক সুবিধার জন্য তাদের শক্তিশালী করবো।”

তিই বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঐকমত্য রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক ক্ষেত্রে, বিজেপি/এনডিএ সরকারের অধীনে বৈদেশিক নীতি এই ঐকমত্য থেকে সরে এসেছে। বিশেষ করে চলমান গাজা সংঘর্ষের বিষয়ে। কংগ্রেস বিশ্বে শান্তি ও সংযমের কণ্ঠস্বর হিসাবে ভারতের বৈশ্বিক খ্যাতি পুনরুদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।”

বিজেপি সরকারের দুই মেয়াদে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো ছিল বলে জানা যায়। বিজেপির মতো, কংগ্রেসও বলেছে, “তারা নিকটতম প্রতিবেশীদের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেবে।”

মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “আমরা নেপাল ও ভুটানের সাথে আমাদের বিশেষ সম্পর্কের প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবো এবং নিজেদের পারস্পরিক সুবিধার জন্য তাদের শক্তিশালী করবো।”

তিনি বলেন, “আমরা নেপাল এবং ভুটানের সাথে আমাদের বিশেষ সম্পর্কের প্রাথমিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করব। আমাদের পারস্পরিক সুবিধার জন্য তাদের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করব।”

দলটি বলেছে, “পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা মূলত তার আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করার ইচ্ছা এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে।”

কংগ্রেস বলেছে, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতির দৃষ্টিভঙ্গি স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গভীরভাবে তৈরি হয়েছিল। জওহরলাল নেহরুর মতো দূরদর্শী নেতাদের প্রজ্ঞার মাধ্যমে বিকশিত হয়েছিল। কংগ্রেস শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতিষ্ঠিত নীতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা, চিন্তা ও কর্মে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন এবং বিশ্বের দেশগুলির সাথে তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে তার দৃঢ় বিশ্বাসকে পুনরায় ব্যক্ত করে।”

নির্বাচনী ইশতেহারে দলটি বলেছে, “আমরা বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানে ভারতের ভূমিকাকে শক্তিশালী করতে কাজ করব, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গ্লোবাল সাউথের অন্যান্য দেশের সঙ্গে অবস্থানের সমন্বয় সাধন করব এবং সীমানা অতিক্রম করে বড় চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সংস্কার ও ক্ষমতায়নের জন্য কাজ চালিয়ে যাব।”

এতে বলা হয়, “বর্ধিত বৈদেশিক বাণিজ্য আমাদের বৈদেশিক নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হবে। আমরা ভারতীয় উৎপাদক এবং ভোক্তাদের স্বার্থে অন্যান্য দেশের সাথে দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্য আলোচনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করব।”

“কংগ্রেস বিশ্বের যে কোনো জায়গায় সন্ত্রাসবাদের বিরোধী। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস নির্মূল করতে আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করব।”

দলটি বলেছে, “তারা চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে স্থিতাবস্থা পুনরুদ্ধার করতে ও “যেসব এলাকায় অতীতে উভয় সেনাবাহিনী টহল দিয়েছিল সেগুলো আবার ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করবে।”

দলটি আরও বলেছে, “এটি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আমরা চীনের প্রতি আমাদের নীতি সামঞ্জস্য করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”

কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “আমরা দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে শ্রীলঙ্কার সাথে কাজ করবো। আমরা শ্রীলঙ্কাকে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে (বিশেষ করে তামিলদের) সাথে সহায়তা করব। আমরা মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করবো এবং মিয়ানমারের জনগণের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার রক্ষায় দেশটির সঙ্গে কাজ করবো।”

ইশতেহারে বলা হয়েছে, “কংগ্রেস ভারতের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ঠিক করতে কাজ করবে যা বর্তমান সরকার কর্তৃক ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা এবং মানবাধিকার দমনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

কংগ্রেস তার ইশতেহারে পঞ্চ ন্যায় বা ‘‘ন্যায়বিচারের পাঁচটি স্তম্ভ’’র ওপর জোর দিয়েছে। এগুলো হলো- ‘‘যুব ন্যায়’’, ‘‘নারী ন্যায়’’, ‘‘কিষান ন্যায়’’, ‘‘শ্রমিক ন্যায়’’ এবং ‘‘হিসসেদারি ন্যায়’’। পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের জন্য তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে জনগণকে দেওয়া গ্যারান্টিগুলোর ওপরও জোর দিয়েছে দলটি।

ভারত,রাজনীতি,নির্বাচন,বিজেপি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close