দুই দশক পর ক্ষমতা ছাড়ছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী
টানা দুই দশক ক্ষমতায় থাকার পর ১৫ মে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং। তার ডেপুটি লরেন্স ওং এর কাছে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব তুলে দেবেন।
সম্পর্কিত খবর
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লরেন্স ওং এর প্রতি ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতাদের সর্বসম্মত সমর্থন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব হস্তান্তরের পর ৫১ বছর বয়সী ওং ২০২৫ সালের নভেম্বরের মধ্যে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে পিএপি’র নেতৃত্ব দেবেন।
লি সিয়েন লুং সোমবার ঘোষণা দিয়ে বলেন, “তিনি ১৫ মে উপ-প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং এর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন।”
৫১ বছর বয়সী উপ-প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং দেশটির অর্থমন্ত্রীর পদেও রয়েছেন। ক্ষমতার পালাবদলের দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শহর রাষ্ট্রটির চতুর্থ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন লরেন্স ওং। পাশাপাশি, তিনি হবেন সিঙ্গাপুরের মাত্র দ্বিতীয় নেতা, যিনি লি পরিবারের সদস্য নন।
১৯৬৫ সালের স্বাধীনতার পর থেকে সিঙ্গাপুরে তিনজন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন যাদের সকলেই অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ মেয়াদে ছিলেন। লি সিয়েন লুং দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউয়ের ছেলে যিনি ২০০৪ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার পর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে শাসন করা পিপলস অ্যাকশন পার্টি (পিএপি) দলের নতুন প্রজন্মের আইন প্রণেতাদের একজন লরেন্স ওং। তিনি বলেন, “আমি বিনয় ও গভীর কর্তব্যবোধের সাথে এই দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি এই উদ্যোগে আমার সব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
লি সিয়েন লুং গত বছরই বলেছিলেন যে, ওই বছরের ২১ নভেম্বর ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশটির পরবর্তী উত্তরাধিকার নির্বাচিত করা হবে। তিনি ২০২২ সালের মধ্যে দলের চতুর্থ প্রজন্মের নেতার কাছে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব হস্তান্তর করে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ব্যাহত হয়।
২০২২ সালের এপ্রিলে লরেন্স ওংকে দলের পরবর্তী নেতা হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে ওং দেশটির মূলনীতি এবং বিদেশ কূটনীতি দেখভাল করছেন।
সিঙ্গাপুরের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুস্তাফা ইজ্জউদ্দিন বলেন, ওয়াং ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শহর-রাষ্ট্রটির নেতা হিসেবে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রধান শক্তির কাছে পরিচিত ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি তিনি নেতৃত্বের একটি শৈলী এনেছেন। যা একটি ভিন্ন প্রজন্মের সঙ্গে আরও বেশি মানানসই। আমি মনে করি সিঙ্গাপুরের মূল নীতিটি ঠিক থাকবে। কারণ এটি এমন একটি পদ্ধতি, যা বহু বছর ধরে কাজ করেছে।”
সিঙ্গাপুরের প্রধান বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টিও কেলেঙ্কারিতে ভুগছে। নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দলের দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন।