• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ইসরায়েলি হামলায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি মারা গেছে

প্রকাশ:  ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত মায়ের জরায়ু থেকে জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুটি বেঁচে নেই। বৃহস্পতিবার শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। শিশুটিকে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রবিবার মধ্যরাতের পরপরই রাফাহ হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশু সাবরিন আল-রুহের জন্ম হয়। চিকিৎসকরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে শিশুটিকে বাঁচাতে চরম লড়াই করেন। হাত পাম্প ব্যবহার করে তার ফুসফুসে বাতাস পৌঁছানোর চেষ্টা করেন তারা।

পরে রাফাহর একটি হাসপাতালে শিশুটিকে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। তার কোমরে একটি টেপ বেঁধে রাখা হয়। এতে লেখা হয় ‘শহীদ সাবরিন আল-সাকানির সন্তান।’ বৃহস্পতিবার সেই শিশুটি মারা গেছে। তাকে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনীর পৃথক বিমান হামলায় রাফাহতে অন্তত ১৬ শিশু মারা যায়। রাফাহর একটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। হামলায় ভবনটিতে থাকা ১৬ শিশুর সবাই মারা যায়।

শনিবার মধ্যরাতে সাবরিন আল সাকানির বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালায়। সাবরিন সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হামলার সময় তিনি, তার স্বামী শুকরি ও তাদের তিন বছরের মেয়ে মালাক ঘুমিয়ে ছিল। হামলায় গুরুতর আহত হন সাবরিন। আর তার স্বামী ও মেয়ে মারা যায়। পরে সাবরিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান। এরপর সেই মৃত মায়ের পেট থেকে জন্ম নেয় শিশ সাবরিন আল-রুহের। পরে শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রাখা হয়। সেখানে চারদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় শিশুটি।

জন্মের সময় শিশু সাবরিন আল-রুহের ওজন ছিল ১ কেজি ৪০০ গ্রাম। জন্মের পরপরই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় শিশুটির। সেই সময় চিকিৎসকরা জানান, অকাল জন্মের কারণে শিশুটির শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।

শিশু সাবরিন আল-সাকানির জন্মের পর রাফাহর আমিরাত হাসপাতালের জরুরি নবজাতক পরিচর্যা বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ সালামা বলেন, ছোট্ট সাবরিনের শ্বাসকষ্ট ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ছিল। তিনি বলেন, আমি ও অন্য চিকিৎসকরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সে মারা যায়।

চিকিৎসক সালামা ফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এটি ছিল খুবই কঠিন ও বেদনাদায়ক দিন। তার জন্ম হয়েছিল যখন তার শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেম পরিপক্ক ছিল না এবং তার প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল ছিল। এটিই তার মৃত্যুর কারণ হয়েছে। সে তার পরিবারে শহীদ হিসেবে যোগ দিয়েছে।’

গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; যাদের মধ্যে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ,গাজায় হামলা,শিশু
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close