• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ছিল: আদালত

প্রকাশ:  ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:১০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ছিলো বলে জানিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে পৌনে ৩ টায় রায় পড়া শুরু করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। এর আগে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে এজলাসে এসে আদালতের কার্যক্রম শুরুর পর মামলা সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক আলোচনা করেন বিচারক। এরপর শুরু করেন অপরাধের পর্যবেক্ষণ বয়ান।

মামলাটির অপরাধের পর্যবেক্ষণে আদালত জানান, সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত ঘটনা।

এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে আদালতের বিচারক ১৫ আসামির বিরুদ্ধে রায় পড়া শুরু করেন। তার আগে দুপুর ২টায় প্রিজনভ্যানে করে ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপসহ মামলার ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

এদিন রায়কে ঘিরে কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এরমধ্যেও ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ সব আসামির ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে মানবন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মামলার রায় ঘোষণা ঘিরে আদালতপাড়ায় উৎসুক মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সকালে সিনহার বোন ও আসামিদের স্বজনরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ, আইনজীবী, পুলিশ, সাংবাদিকদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর, যিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর একদল তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফে দুটি ও রামুতে একটি মামলা করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যের নামে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

২০২০ সালের ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার আসামি সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিন বাসিন্দা, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য, প্রদীপের দেহরক্ষীসহ আরও সাতজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এরপর ২০২০ সালের ২৪ জুন চার্জশিটভুক্ত আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আত্মসমর্পণ করলে এ মামলার ১৫ আসামিই আইনের আওতায় আসেন।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম। এতে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০২১ সালের ২৭ জুন সব আসামির উপস্থিতিতে বিচারক ইসমাইল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর প্রায় দুই মাস পর ২৩ আগস্ট বাদী শারমিন ফেরদৌসের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। এ মামলায় মামলায় মোট সাক্ষী ছিলেন ৮৩ জন। এদের মধ্যে আট দফায় ৬৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর ৯ থেকে ১২ জানুয়ারি মামলায় উভয়পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।


পূর্বপশ্চিম/এসকে

মেজর সিনহা,সিনহা হত্যাকাণ্ড
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close