শাকিব খানের মামলায় রহমত উল্লাহর জামিন

চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে চিত্রনায়ক শাকিব খানের করা মামলায় আত্মসমর্পণের পর জামিন পেয়েছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। আজ বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আরফাতুল রাকিবের আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন।

এদিন রহমত উল্লাহ আদালতে উপস্থিত হন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে শাকিব অসুস্থ থাকায় আদালতে উপস্থিত হননি।

এর আগে গত ২৩ মার্চ শাকিব খান আদালতে এ মামলা করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ২৬ এপ্রিল আসামিকে হাজির হতে সমন জারি করেন। এ ছাড়া ২৭ মার্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেন শাকিব খান৷ পরে গত ১৩ এপ্রিল মানহানির অভিযোগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মামলা করেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। এ মামলা পিবিআই তদন্ত করছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, চার বছর আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান বাংলা ছায়াছবি ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে শিবা আলী খানকে মনোনীত করা হয়। এ ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়া যান শাকিব। তবে শিবা আলী খান ভিসা জটিলতার জন্য শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি। তার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেনেসা সাবরিনের সঙ্গে শাকিবকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন রহমত উল্লাহ। তবে শাকিব তার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে এ প্রস্তাব নাকচ করে দেন।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, শুটিং শেষে শাকিবের রিফ্রেশমেন্টের জন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রেনেসা সাবরিনসহ আরও ২-৩ জন অপরিচিত লোকজনকে দেখতে পান শাকিব। মামলার আসামি রহমত উল্লাহসহ অন্যদের সঙ্গে ক্লাবের খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার পানীয় পান করেন তিনি। একপর্যায়ে শাকিব অসুস্থবোধ করেন। হোটেলে ফেরত আসার সময় রহমত উল্লাহ এবং অন্য ২-৩ জন লোককে খুঁজে না পেয়ে রেনেসা সাবরিনের কাছ থেকে বিদায় নেন শাকিব। তবে গভীর রাতে হোটেলে ফেরত যেতে গেলে রেনেসা সাবরিন তাকে বরেন, ‘আপনি যেহেতু অসুস্থবোধ করছেন তাহলে চলেন আমি আপনাকে হোটেল রুমে পৌঁছে দিয়ে আসি।’ শাকিব অনেকটা নিরুপায় হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং হোটেল রুমের উদ্দেশে রওনা দেন। আসার সময় বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে শাকিব অজ্ঞান হয়ে যান।’

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরদিন সকাল বেলা আসামি রহমত উল্লাহ শাকিবকে ফোনে বলেন, ‘তুমি রাতে ওই মহিলার সাথে কী করেছ, সব কিছুর ভিডিও ক্লিপ আমার হাতে। তুমি যদি আমাকে এক লাখ ডলার চাঁদা না দাও, তাহলে আমি সব ভিডিও ক্লিপ এবং রেনেসা সাবরিনকে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার নামে অভিযোগ করব এবং তুমি বাংলাদেশে যেতে পারবে না।’ এ রকম বিভিন্ন ভয়ভীতির একপর্যায়ে শাকিব ভয় পেয়ে যান। শাকিব ভয় পেয়ে এবং তার ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক সমস্যার কথা চিন্তা করে আসামি রহমত উল্লাহকে ৫ হাজার অস্টেলিয়ান ডলার দেন। পরে আসামি রহমত উল্লাহ তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোট ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নেন। পরে চাঁদা দিতে না পারায় শাকিবকে বলা হয় যে, ‘তোমার নামে অস্ট্রেলিয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে।’ চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দিলে আসামি রহমত উল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং শাকিবের পরিবারের সদস্যদের কাছে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটাতে থাকেন। ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ রহমত উল্লাহ শাকিব খানের কাছে এক লাখ ডলার চাঁদা দাবি করেন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।