• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

যুদ্ধাপরাধ : বাগেরহাটের ৯ জনের রায় বৃহস্পতিবার

প্রকাশ:  ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাটের ৯ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সম্পর্কিত খবর

    চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.শাহীনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এ দিন ঠিক করেন।

    এ মামলায় বর্তমানে ৯ আসামির মধ্যে ছয়জন পলাতক। কারাবন্দী তিন আসামি হলেন, খান আকরাম হোসেন, শেখ মো. উকিল উদ্দিন ও মো. মকবুল মোল্লা।

    আসামিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগগুলো হলো;

    এক নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৬ মে ১৫/২০ জন রাজাকার ও ২৫/৩০ জন পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানাধীন চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষদের ওপর অবৈধভাবে হামলা চালিয়ে ৪০/৫০টি বাড়ির সমস্ত মালামাল লুণ্ঠন করে, বাড়িঘর অগ্নিসংযোগে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে, দুইজন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে এবং ১০ জন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।

    দুই নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই আসামিরা বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে অবৈধভাবে নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের চারজন লোককে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয়।

    তিন নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানাধীন ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুইজন নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে অবৈধ আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।

    চার নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের লোককে আটক ও অপহরণ করে কাঁঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।

    পাঁচ নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন বিলকুল গ্রাম হতে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে অন্যায় আটক ও অপহরণ করে মোড়লগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাঁটির ব্রিজের উপরে নিয়ে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে।

    ছয় নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ নিরস্ত্র উকিল উদ্দিন মাঝিকে অবৈধভাবে আটক করে হত্যা করে এবং তার মেয়ে তাসলিমাকে অবৈধভাবে আটক ও অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আসে। কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশেপাশের রাজাকার ক্যাম্পে দীর্ঘদিন অবৈধভাবে সলিমাসহ চারজনকে আটকিয়ে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ দখলদার মুক্ত হলে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশি করে ভিকটিম তাসলিমাকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন।

    সাত নম্বর অভিযোগ : বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ নিরস্ত্র শ্রীধাম কর্মকার ও তার স্ত্রী কমলা রানী কর্মকারকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করতে থাকে। আসামিরা শ্রীধাম কর্মকারকে হত্যা করে কমলা রানী কর্মকারকে জোরপূবক অপহরণ করে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে এনে আটকিয়ে রাখে। উল্লিখিত আসামিসহ কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশেপাশের রাজাকার ক্যাম্পে কমলা রানী কর্মকারসহ আটককৃত অন্যান্য চারজনকে দীর্ঘদিন রাজাকার ক্যাম্পে আটকিয়ে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রায় এক মাস শারীরিক নির্যাতনের পর কমলা রানী কর্মকার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close