• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ভুয়া কোম্পানি দিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থা নিতে দুদকে আবেদন

প্রকাশ:  ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
অভিযুক্তরা

ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে দুর্নীতি ও জালিয়াতি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন এক আইনজীবী।

চক্রের অভিযুক্ত সদস্যরা হলেন- সাজ্জাদ খান, জাফর মীর, সৈয়দ হারুন ও এদের সেল্টারদাতা আমিরুল ইসলাম পিকু মৃধা।

সম্পর্কিত খবর

    দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর পাঠানো অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতিবাজ ও অসৎ জালিয়াতি চক্রেরা কিছু ভুঁইফোড় মাল্টি পারপাস কোম্পানি ও সঞ্চয় সমিতির নামে মাধ্যমে একাধিক কোম্পানি করে একেক সময়, একেক নামে, একেক জায়গায় সঞ্চয়/সমিতির অফিস খুলে নিরীহ মানুষদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে চক্রটি এখন অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকার মালিক সেজেছে। এদের আত্মীয়-স্বজন, পরিবার পরিজনদের নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এই চক্রটির সর্বশেষ অফিস এখন ঢাকার মিডর্ফোট হাসপাতাল বাবু বাজার ও সদরঘাট-কেরানীগঞ্জ এলাকায় অবস্থান নিয়ে অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছে।

    এদের সব অবৈধ কার্যক্রম রক্ষা করতে পুলিশের এক এডিশনাল এসপির ভাইকে পার্টনার বানিয়েছে। জনৈক এই পুলিশ কর্মকর্তার নাম তারা যত্রতত্র ব্যবহার করছে এবং কতিপয় দালালদের ছত্রছায়ায় এই অবৈধ চোট ব্যবসা করে অসংখ্য মানুষের টাকা লুটপাট করছে। চক্রটির কথিত অফিসের নাম ‘রুপালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি’ যার কর্ণধার সাজ্জাদ খান ও মীর জাফর। এ ছাড়া অপর কোম্পানি ‘মধুমতি কো-অপারেটিভ লিমিটেড’, যার এমডি সৈয়দ হারুন অর রশীদ।

    এরা দীর্ঘ দিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু দিনের জন্য অফিস নিয়ে সেখান থেকে বিভিন্ন শ্রেণীর-পেশার মানুষকে ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের থেকে লাখো টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থেকে তাদের নিজ এলাকা গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন জয়নগর বাজারসহ কাশিয়ানী- মুকসেদপুর এলাকাজুড়ে স্থানীয় কিছু দালাল ও মোড়লদের ম্যানেজ করে কতিপয় পুলিশ প্রশাসনদের মাসোয়ারা দিয়ে তারা সুদের ওপর টাকা লাগিয়ে গ্রামের হতদরিদ্র ও নিরীহ মানুষদের জায়গা-জমি, ভিটে-মাটি দখল করে নিয়ে অসংখ্য পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে দিয়ে পথে বসিয়েছে।

    তাদের অত্যাচারে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তাদের হঠাৎ করে সম্পদশালী হওয়ার রহস্য নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থা তৈরি হওয়ায় এখন ঘরে ঘরে সঞ্চয় সমিতি ও চড়া সুদে লেনদেনের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। স্থানীয়ভাবে এদের সেল্টারদাতা ও প্রভাবশালী আমিরুল ইসলাম পিকু মৃধা ও দালাল মিন্টু মৃধা এদের ভয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত।

    এই চক্র সম্পর্কে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, এই চোট ব্যবসায়ী ‘রুপালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতির’ কর্ণধার সাজ্জাদ খাঁন, সাত-আট বছর আগে এলাকার জয়নগর বাজারে মুদি দোকানে কাজ করতো এবং রাতের বেলায় বিভিন্ন দোকানের বেড়া কেটে এবং কখনো কারও দোকানের চালা ও জানালা কেটে বিভিন্ন মালামাল এবং টাকা-পয়সা চুরি করতো! এই চক্রটি বাজারে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়লে সেখান থেকে পালিয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছিল। তারাই এখন অবৈধ উপায়ে কোটিপতি হয়ে এলাকায় এসে মানুষের বাড়ি ঘর, জমা জমি, হাস-মুরগি পর্যন্ত জুলুমবাজিসহ দখল করে নিচ্ছে। সুদখোর লুটেরাজদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাদের জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে, এমনি ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়। সম্প্রতি এই সাজ্জাদ-হারুন চোট বাহিনীর বিরুদ্ধে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর একজন স্বনামধন্য সমাজসেবক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মশি শ্রাবণকে সন্দেহাতীতভাবে সাজ্জাদ খান ও তার একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মারুফ বাহিনী নিয়ে মশি শ্রাবণের ঢাকার কাকরাইলস্থ অফিসে ও তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে হামলা চালিয়েছে। জীবন নাশের হুমকি প্রদান করেছে।

    আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে এই দুর্নীতিবাজ চক্রটিকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে উক্ত ‘মধুমতি কো-অপারেটিভ লি.’, যার এমডি সৈয়দ হারুন অর রশীদ এবং ‘রুপালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি’ যার কর্ণধার সাজ্জাদ খাঁন ও মীর জাফরসহ এদের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সকল সম্পদের হিসাব নেওয়াসহ এই চক্রের অন্যতম দালাল ও স্থানীয় গডফাদার পিকু মৃধা সম্পদের হিসাব নেওয়ার জন্য জরুরি কার্যকরী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন একজন আইনজীবী।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close