ছদ্মবেশে পালিয়ে ১৭ বছর: অবশেষে ধরা যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি
শওকত আলী (৩৪)। হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজা হয় তার। রায়ের পর ১৭ বছর ধরে এলাকায় থাকেন না। সেখানে বাড়িঘর ভিটা থাকলেও যান না। গ্রেফতারের ভয়ে ঢাকায় এসে প্রথমে নিজের নাম বদল করেন। এরপর কাজ নেন লন্ড্রির দোকানে। আবারও কখনো সেলসম্যানের কাজ করেন। প্রায় দেড় যুগের মতো পালিয়ে থেকেও অবশেষে রক্ষা পাননি। বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হতে হয় তাকে।
শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল হক।
সম্পর্কিত খবর
তিনি জানান, ২০০৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় রক্ত দিয়ে গোসলের হুমকি দিয়ে জবাই করে ও পায়ের রগ কেটে শিশু শাকিলকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শওকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি পলাতক ছিলেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজের নাম পরিবর্তন করে প্রথমে ঢাকায় একটি লন্ড্রিশপে এবং পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কাজ করেন শওকত। সর্বশেষ চাঁদপুরে একটি বেকারি পণ্যের সেলসম্যানের কাজ করতেন।
ফজলুল হক জানান, ২০০৬ সালে কসবার আড়াইবাড়ি এলাকায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪ বছরের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্র আতিকুর রহমান শাকিলকে মারধর করা হয়। এ নিয়ে শাকিলের মা প্রতিবাদ করলে তারা শাকিলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার রক্ত দিয়ে গোসল করার হুমকি দেন। পরদিন রাতে তারাবির নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে শওকত ও তার সহযোগীরা শাকিলকে অপহরণ করে। পরে জাহের মিয়ার ধানক্ষেতে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পায়ের রগ কেটে দেন তারা।
এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ১১ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। এ ঘটনার আগে থেকেই গ্রেফতারকৃত শওকত আলী পলাতক ছিলেন।