• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ধর্ষণকাণ্ড: ঢাবি কমিটি বিলুপ্তি মানেন না বিদ্রোহীরা

প্রকাশ:  ২৫ মার্চ ২০২২, ১৬:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ষণ ইস্যুতে বিতর্কের জেরে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি বিলুপ্ত করেছে ফয়েজ উল্লাহ ও দীপক শীলের নেতৃত্বাধীন কমিটি। তবে ওই কমিটির পাশে দাঁড়িয়েছে নজির আমিন জয় ও রাগীব নাইমের নেতৃত্বের বিদ্রোহী কমিটি।

ফয়েজ উল্লাহদের নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ধর্ষণ ইস্যুতে যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের কার্যক্রম স্থগিত ও কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। এছাড়া এ ঘটনায় ওই কমিটির কোনো গাফিলতি ছিলো কি না তাও তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

তবে ওই সিদ্ধান্ত অমান্য করে কমিটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি। এমনকি ওই সিদ্ধান্ত মানেন না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির বিদ্রোহী গ্রুপের অন্যতম শীর্ষ নেতা রাগীব নাইম। তারা ঢাবি কমিটির পাশে দাঁড়িয়েছেন।

ছাত্র ইউনিয়ন সূত্র জানায়, গত সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যে মূল ধারা ও বিদ্রোহী ধারা আলাদা কমিটি গঠন ও পরে আলাদা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই গ্রুপের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই কমিটি গঠনে গণতান্ত্রিক ব্যত্যয় ঘটার দাবি করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ। পরে বিদ্রোহী গ্রুপের অনুসারীরাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের কমিটি গঠন করে।

গত ১৩ মার্চ গঠিত ওই কমিটিতে প্রচার প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় পূর্বেই এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আকিফ আহমেদকে। পরে ভুক্তভোগী তরুণী পুনরায় নতুন কমিটির কাছে অভিযোগ দিলে আকিফ আহমেদকে বহিষ্কার করা হয়। এ নিয়ে কমিটির পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতি প্রকাশ করলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ ওঠে, অভিযুক্তকে বাঁচাতে তাকে দায়ী করে ওই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সমালোচনার মুখে বিবৃতিটি মুছে ফের নতুন বিবৃতি দেয়া হয়।

ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের অভিযোগ, বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা পূর্বের অভিযোগ লুকিয়ে তাদের পদায়িত করেছে।

এসব ঘটনার জেরে ফয়েজ উল্লাহ ও দীপক শীলের নেতৃত্বাধীন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের কমিটি বিলুপ্ত করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার বলেন, এটি কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশের দাবি। ফয়েজ উল্লাহ ও দীপক শীলের যে কমিটি রয়েছে তারা এই বিবৃতি দিয়েছেন। তারা এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে, সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের সঙ্গে আমাদের ঢাবি সংসদের কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই। ঢাবি সংসদ নজির আমিন চৌধুরী জয় ও রাগীব নাঈমের নেতৃত্বে রয়েছে। তাই ফয়েজ-দীপক কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর বর্তায় না। আমাদের কার্যক্রম যথারীতি চলবে।

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ধর্ষণে অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি বহিষ্কার করেছে। এটি বহাল থাকবে। একই সঙ্গে এখানে ভিকটিম ব্লেমিংয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। এটি অনেক বড় অপরাধ। এটি ছাত্র ইউনিয়নের নীতি-নৈতিকতাবিরোধী। এ ধরনের কার্যক্রমে যুক্ত হলে ছাত্র ইউনিয়নের যেকোনো কর্মী সাংগঠনিক নৈতিকতা হারান।

তবে কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের অন্য অংশের সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, ফয়েজ উল্লাহ-দীপক শীল নেতৃত্বাধীন কমিটির সিদ্ধান্ত তাঁরা মানেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের ওই সিদ্ধান্তের ফলে ছাত্র ইউনিয়নের ঐক্য পুনরুদ্ধারের যে প্রক্রিয়া চলছে, তা বাধাগ্রস্ত হবে।


পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস/এসকে

ছাত্র ইউনিয়ন,ধর্ষণ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close