• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

গবির এক কক্ষেই সকল অনুষ্ঠান, নেই সাংস্কৃতিক মঞ্চ

প্রকাশ:  ০৯ অক্টোবর ২০২২, ১৭:২৩
গবি প্রতিনিধি

সাংস্কৃতিক মঞ্চ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অলংকার স্বরুপ। সাধারণত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য উম্মুক্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চ বা অডিটোরিয়াম থাকে। কিন্তু সেদিক থেকে ৩২ একরের সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) তার সূচনালগ্ন থেকেই ভিন্ন। বিশাল আয়োজনের যেকোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিত্যকার সঙ্গী হয়ে দাড়িয়েছে একাডেমিক ভবনের ৪১৭নং কক্ষ।

সম্প্রতি গত ২৭ সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, আগামী ১০ অক্টোবর নবীন বরণ অনুষ্ঠান হবে। যেটি অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১৭ নম্বর কক্ষেই। এর মাস দুয়েক আগে গত ৩০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও হয় ঐ একই কক্ষে। শুধু এ দুটো অনুষ্ঠানই নয়, নিয়মিতভাবে শোক দিবস, আলোচনা সভা, সেমিনার, শিক্ষা সমাপনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সব কিছুর মূলে যেন বর্তমানে একমাত্র সম্বল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কক্ষটি। যদিও বিভিন্ন সেমিনার বা সভার ক্ষেত্রে তৃতীয় তলায় অবস্থিত আইকিউএসি কক্ষটিও ব্যবহৃত হয়।

অনুষ্ঠান শুরু হলে সাজানো-গোছানো, আবার শেষে সেগুলো খুলে চলে ক্লাস, পরীক্ষা। যেন এক রুমেই সব। মূলত সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে কক্ষটি ব্যবহৃত হয়।

বর্তমানে সকল অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়টি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। আসন্ন নবীন বরণ অনুষ্ঠান ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিংবা ক্লাসরুমে নিন্দার ঝড় বইছে। আলাদা একটি সাংস্কৃতিক মঞ্চ এখন গবি শিক্ষার্থীদের সময়ের দাবি।

বিষয়টি নিয়ে হাফিজুল্লাহ হৃদয় নামক এক শিক্ষার্থী বলেন, যেখানে আমাদের হাইস্কুলের নবীনবরণ হয় সুবিশাল মাঠে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা প্রতিষ্ঠানে কিনা নবীনবরণ হবে একটা রুমের মধ্যে। ভাবতেই কেমন লাগে।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, একটি বিভাগের শিক্ষার্থীর ধারণক্ষমতা নেই যে কক্ষে, সেখানে কিভাবে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে?

গবির সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ঔষধ গবেষক পবিত্র কুমার শীল বলেন, আমি মনে করি একটি সাংস্কৃতিক মঞ্চ ও টিএসসি দুটোই শিক্ষার্থীদের জন্য খুব জরুরি। মঞ্চ শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশ করার সুযোগ ও সাহস বৃদ্ধি করবে।

অপরদিকে, টিএসসি (ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র) সবসময় ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক নিবিড় ও তাৎপর্যপূর্ণ করে গড়ে তোলে। ফলে ছাত্রদের জ্ঞান বহুগুণে বৃদ্ধি পায় যা শুধুমাত্র ক্লাসে সম্ভব না বলে জানান এ শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, ৪১৭ নাম্বার কক্ষ একটা ভালো পরীক্ষার হল। কিন্তু টিএসসি ও সাংস্কৃতিক মঞ্চের বিকল্প কখনোই এই রুম হতে পারে না। কারণ এখানে সেই মুক্ত পরিবেশ ও অবাধ সুবিধা নেই, যা মঞ্চ ও টিএসসিতে থাকে।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গবির সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, এরকম একটি আয়োজনকে নবীন বরণ বলতেই কষ্ট হচ্ছে। কারণ নবীনদের পুরো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থাৎ শিক্ষকদের পাশাপাশি সকল শিক্ষার্থীরাই বরণ করার সুযোগ পাবে। কিন্তু সেখানে কিনা মাত্র নবীনরা নিজেদেরকে নিজেরা বরণ করছে।'

আসন্ন ১ম সেমিস্টারের নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং মঞ্চ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, 'যেহেতু সময় সংক্ষিপ্ত এবং নবীন বরণ অনুষ্ঠান হবে শুধু মাত্র ১ম সেমিস্টারের, সেহেতু ৪১৭ নং কক্ষের ধারণ ক্ষমতায় সমস্যা হবে না। তাছাড়া এ রুমে এখন থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠান আরো আরামদায়ক করতে এসি, পর্দার ব্যবস্থাসহ সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ চলছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

গণ বিশ্ববিদ্যালয়,সাংস্কৃতিক মঞ্চ,অনুষ্ঠান,কক্ষ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close