• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েই চলছে শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু আক্রান্তের হার,নেই কোন বিশেষ পদক্ষেপ

প্রকাশ:  ৩০ নভেম্বর -০০০১, ০০:০০ | আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৩৫
তারেক হাসান, জবি প্রতিনিধি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে(জবি) ডেঙ্গু আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে।প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে কোন না কোন শিক্ষার্থী। ইতোমধ্য বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুও হয়েছে।তারপরও টনক নড়ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।ডেঙ্গু নিরসনের জন্য নেই কোন বিশেষ ব্যবস্থা।

দুই-একবার ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতা সভা করা হলেও কথাতেই আটকে আছে নিধনের কাজ।

এদিকে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।ফলে মশার প্রজনন বৃদ্ধিতে ডেঙ্গু রোগের বিস্তারের প্রবনতা বাড়ছে।

মঙলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইন্স ফ্যাকাল্টির সামনে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়া প্রশাসনিক ভবনের পিছনে,কলা ভবনের পাশে, বোটানিক্যাল গার্ডেন, কাঠালতলায় ও মুজিবমঞ্চে জলাবদ্ধতা দেখা যায়।যেখান থেকে প্রতিনিয়তই এডিস মশার লাভা উৎপন্ন হচ্ছে।

অন্যদিকে বিশ্যবিদ্যালয়ের নেই কোন ড্রেনের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা।অধিকাংশ ড্রেনেই পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে।এতে এডিস মশার প্রজনন বৃদ্ধির পাশাপাশি ডেঙ্গুসহ নানান রোগ বিস্তারের ঝুকি বাড়ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে।কিন্তু প্রশাসন এসব নিয়ে কোন গুরুত্বই দিচ্ছে না। মাঝে মধ্যে মশক নিধনে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হলেও তা পর্যাপ্ত পরিমানে হচ্ছে না। বছরে একবারও ডাস্টবিন ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে না।

এদিকে বেহাল দশা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির ভিতরে।সাড়াবছর সেখানে কাদা-পানি লেগেই থাকে।সেখানে গাদাগাদি করে ১৬টি ভাতের হোটেল ও চায়ের দোকান রয়েছে। কিন্তু একটি দোকানেরও নেই কোন পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা।খোজ নিয়ে জানা যায় গত ১০ দিনে ৫-৬ জন দোকানদার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে সজ্জাসায়ী। সেখানে চা ব্যবসায়ী কে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন,বেশ কয়েকজন দোকানদার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তাই বেশ কিছুদিন যাবত এসব চা ও ভাতের হোটেলের দোকান বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিক ইমরোজ মুন বলেন, ছুটি কাটিয়ে কিছুদিন আগেই বাড়ি থেকে এসেছি।এখন আমি দুইদিন যাবত জ্বরে ভুগছি। ডেঙ্গু টেষ্ট করে পজেটিভ এসেছে।তাই অতি শিগ্রই আবারো বাড়ি চলে গিয়ে ঠিকঠাক চিকিৎসা নিতে হবে।

জবির উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মিতা শবনম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ থেকে ২৮০ জনের মতো শিক্ষার্থী ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা ও ওষুধ নিতে আসছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গু পজেটিভ হয়ে আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা জ্বর নিয়ে আসছেন।আমাদের এখানে পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় আমরা তাদের বাহিরে থেকে ডেঙ্গু টেস্ট করানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। এদের মধ্যে অনেকেরই ডেঙ্গুর উপলক্ষন থাকে।

ডেঙ্গু নিরসনের পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন,আমারা প্রতিদিন নিধনে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটাচ্ছি।কিন্তু খুব একটা কাজে দিচ্ছে না।আমাদের ক্যম্পাসকে পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।মসা প্রজনন যেন বৃদ্ধি না পায় সেদিকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহ্বায়ক এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন,আমরা প্রতিনিয়ত ক্যম্পাস পরিস্কার রাখার জন্য কাজ করে চলছি।আমাদের এখানে পরিচ্ছন্ন কর্মী কম রয়েছে।তারপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য,২০২১ সালের ৩১ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়ন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরকে আহ্বায়ক ও এস্টেট কর্মকতা মোহাম্মদ কামাল হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেনগুলো প্রাথমিকভাবে পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিলেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকেনি।

ডেঙ্গু আক্রান্ত,অসুস্থ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close