• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ঢাবির ৯৬ বিভাগ-ইনস্টিটিউটের ৪৮টিতে গত বছর পর্যন্ত স্নাতকোত্তরে থিসিস ছিল না: উপাচার্য

প্রকাশ:  ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৩৯
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের মধ্যে ৪৮টিতে গত বছর পর্যন্ত স্নাতকোত্তরে শিক্ষার্থীদের কোনো থিসিস (গবেষণাকাজ) হতো না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল। ১০০ বছরের পুরোনো অনেক স্বনামধন্য বিভাগেও গবেষণাকাজ ছিল না এবং পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্নাতকোত্তরে থিসিস যোগ করার পরামর্শ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়কে চিঠি দিতে বললাম যে আমাদের পরামর্শ কোন কোন বিভাগ-ইনস্টিটিউট গ্রহণ করেছে। খুব বেশি যে সদুত্তর পাওয়া গেছে, তা নয়।’

আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাকসুদ কামাল এসব কথা বলেন। বক্তব্যের আগে, ‘আলী রীয়াজ স্নাতকোত্তর গবেষণা পুরস্কার ট্রাস্ট ফান্ড’–এর পক্ষ থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কারের চেক তুলে দেন তিনি। ২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজের অর্থায়নে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ‘আলী রীয়াজ স্নাতকোত্তর গবেষণা পুরস্কার ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠিত হয়। সেই তহবিল থেকে আজ প্রথমবারের মতো তিন শিক্ষার্থী পুরস্কার পান।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য অনেকগুলো কাজ করেছি। আমি সহ-উপাচার্যের (শিক্ষা) দায়িত্বে থাকাকালে তৎকালীন উপাচার্যের (মো. আখতারুজামান) সঙ্গে আলোচনা করে একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটকে একটি পরামর্শ পাঠিয়েছিলাম। পরামর্শটি ছিল স্নাতকোত্তরের অন্তত ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে যেন থিসিসের (গবেষণাকাজ) সুযোগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জ্ঞান ব্যবস্থাপনার কাজ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যদি জ্ঞান ব্যবস্থাপনা না হয়, তাহলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সেটা হয় কলেজের একটা বর্ধিত রূপ। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ স্কলারদের জায়গা। এই দুয়ের সমন্বয়েই বিশ্ববিদ্যালয়। কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের কোনো চিন্তাকে খাটো করে দেখার এতটুকু অবকাশ নেই। শিক্ষার্থীদের কোনো কথা যদি সঠিক হয়, সেটাকে আমরা অবশ্যই অ্যাড্রেস করব।’

মাকসুদ কামাল বলেন, ‘উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার পর সম্প্রতি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়কে একটা চিঠি দিতে বললাম যে কোন কোন বিভাগ-ইনস্টিটিউটে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষণাকাজ হয়, কোন কোন বিভাগে হয় না। আমরা দেখলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬টি বিভাগ-ইনস্টিটিউটের মধ্যে ৪৮টিতে গত বছর পর্যন্ত স্নাতকোত্তরে শিক্ষার্থীদের কোনো গবেষণাকাজ হতো না। ১০০ বছরের পুরোনো অনেক স্বনামধন্য বিভাগেও গবেষণাকাজ ছিল না। পরে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়কে আরেকটা চিঠি দিতে বললাম যে আমাদের পরামর্শ কোন কোন বিভাগ-ইনস্টিটিউট গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষণাকে ইন্ট্রোডিউস করেছে । খুব বেশি যে সদুত্তর পাওয়া গেছে, তা নয়। সুতরাং, আমাদের সমালোচনা আমাদেরই করতে হবে। কথা বলে তা ধারণ না করলে সেই পরিবর্তন কখনো সম্ভব হবে না।’

দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক মূল্যায়নপদ্ধতি চালু হতে যাচ্ছে বলে জানান উপাচার্য । তিনি আরও বলেন, ‘এর জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি প্রায় শেষ পর্যায়ে। শ্রেণি-প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে । শিক্ষার্থীদের কর্তৃক শিক্ষক মূল্যায়নপদ্ধতির মাধ্যমে বস্তুত অর্থে আমাদের মিথস্ক্রিয়া, স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বাড়বে। আগামীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আলোচনা-সমালোচনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কী করা দরকার, তা জানতে চাইব।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুঠোফোনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষক আলী রীয়াজ। এতে আরও বক্তব্য দেন বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকেরা ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলী রীয়াজের বোন সফুরন আরা, টকশো ‘তৃতীয় মাত্রা’র উপস্থাপক ও পরিচালক জিল্লুর রহমান, সাংবাদিক তারিক চয়ন প্রমুখ।

শিক্ষার্থী,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,উপাচার্য,শিক্ষা,উচ্চশিক্ষা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close