আবারও শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা কুবি শিক্ষক সমিতির

ছবি: সংগৃহীত

সাত দফা দাবি না মানায় তৃতীয় বারের মতো সেমিস্টার পরীক্ষা ব্যতীত সব ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতি।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এবং সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানা গেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির জরুরি সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি নানা অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি কুবি উপাচার্য বরাবর সাতটি দাবি উপস্থাপন করে। দাবিসমূহ ১৮ মার্চের মধ্যে বাস্তবায়িত না হওয়ায় গত ২৭ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষকরা শ্রেণি কার্যক্রম বর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম গত ৪ এপ্রিল পর্যন্ত চালু থাকলেও শিক্ষকদের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলো বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ প্রশাসন কর্তৃক গ্রহণ করা হয়নি।

শিক্ষক সমিতি আশা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকটগুলো দূরীকরণের জন্য উপাচার্য শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে ডাকবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীল পরিবেশকে স্বাভাবিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। কিন্তু তিনি ন্যূনতম কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বরং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে অনবরত মিথ্যাচারের মাধ্যমে শিক্ষকদের হেয় করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন। তাই শিক্ষক সমিতি বাধ্য হয়ে গত ৩ এপ্রিল কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা আহ্বান করে। ওই কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে চলমান চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, 'গত ৪ তারিখ পর্যন্ত অফিস কার্যক্রম চলমান ছিল। আমরা ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম আমাদের দাবিগুলো উপাচার্য মেনে নিন কিনা। কিন্তু তিনি কোনো সমাধানের দিকে না গিয়ে বরং বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিনি শিক্ষকদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে আমরা শিক্ষক সমিতি ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষকদেরকে শ্রেণী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা ২৩ তারিখ শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি সাধারণ সভা করব। সে সভায় পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।'

মিডটার্ম, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চূড়ান্ত পরীক্ষা (সেমিস্টার) অনুষ্ঠিত হবে। তবে বাকি মিডটার্ম, প্রেজেন্টেশন, অ্যাসাইনমেন্ট সব বিষয়ই এর অন্তর্ভুক্ত।

এর আগে, গত ১২ মার্চ এক জরুরি সাধারণ সভায় সাত দফা দাবি ও তিন সিদ্ধান্ত পেশ করা হয়। একইদিনে প্রথমবারের মতো ১৩ ও ১৪ মার্চ শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৮ মার্চ দ্বিতীয়বারের মতো ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত শ্রেণী কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।