• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও হলেই থাকবে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ:  ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাস চাপায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে লাগাতর চারদিন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ, এডমিনিস্ট্রেশন ভবন, একাডেমিক ভবন, ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা, ভিসিকে অবরুদ্ধ, শিক্ষককে লাঞ্ছিত, তিনটি বাসে আগুনসহ নানা ঘটনান মধ্যে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।

স্থগিত ঘোষণার পর, রাত সাড়ে ১১টার পর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়। হল ভ্যাকেন্ট ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার জন্য শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টায় সিন্ডিকেট সভায় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীরা আপাতত আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবেন বলে জানান চুয়েট রিজিষ্টার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ৮টা হতে রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যকার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এর আগে এই দিন পৌনে ৪টায় চুয়েট রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে চুয়েটকে অনির্দিষ্টকালের চুয়েট ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকাল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের এবং ২৬ এপ্রিল সকাল ১০ টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ঘোষণার পরপর শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আটকে থাকা শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাসে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন ও এডমিনিস্ট্রেশন ভবনে তালা দিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিকাল পাঁচটার দিকে চুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন দোলন, সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাসরুর আহমেদসহ কয়েকজন শিক্ষককে ‘লাঞ্ছিত করে’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। পরে রাউজান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমার মধ্যস্থতায় চুয়েট প্রশাসন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমাঝোতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়া নগরে বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই শিক্ষার্থী পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন নিহত হয়। অপরজন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম এভার কেয়ারে চিকিৎসাধীন শেষে বাসায় অবস্থান করছে। এই দিন সন্ধ্যা সাতটায় তারা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে রাত নয়টায় অবরোধ তুলে নিলেও পরদিন ২৩ এপ্রিল সকাল নয়টা রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যায়। এইদিন তারা ৯দফা দাবি পেশ করেন। এর পরদিন ২৪ এপ্রিল দাবি আদায়ে পুনরায় সকাল দশটা হতে সড়ক অবরোধসহ এডমিনিস্ট্রেশন ভবনে তালা লাগিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

চুয়েট প্রশাসনের মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৪ এপ্রিল বাসচালক তাজুল ইসলামকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রতি পরিবারকে সরকারের পক্ষ হতে ৫ লাখ করে, বাস মালিক সমিতি পক্ষ হতে ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। আহত শিক্ষার্থীকে সরকারের পক্ষ হতে ৩ লাখ এবং বাস মালিকের পক্ষ হতে ১ লাখ দেওয়া হবে জানায়, চুয়েট প্রশাসন।

এদিকে টানা চারদিন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরুদ্ধ থাকার ফলে রাঙ্গুনিয়া, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, রাজস্থলীর প্রায় ৮ লাখ মানুষ জিম্মি হয়ে আছে। জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অবরোধে অ্যম্বুল্যান্স, ওষুধ, বিদেশযাত্রী, রোগী বহনকারী চলাচলের সুযোগ দিলেও কাঁচামাল, মাছ, গৃহ নির্মাণ সামগ্রীসহ নানা পন্যবাহী ট্রাক, পিকআপ আটকে আছে। এতে কয়েকশ কোটি টাকা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

চুয়েট,শিক্ষার্থী,আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close