নারী-পুরুষের সাংসারিক সমঝোতা জরুরি: আসিফ
কয়েক দিন আগে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর তার বড় ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। পুত্রবধূ ঘরে আনতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত তিনি। সেই আনন্দের কথাও ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন এই শিল্পী। বিয়ে নিয়ে সমাজে প্রচলিত কিছু ‘ট্যাবু’ রয়েছে যা তার পছন্দ নয়। কয়েক দিন আগে এ নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। ফের বিয়ে বেশ কিছু মতামতা ব্যক্ত করলেন আসিফ।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকালে এ নিয়ে আরেকটি পোস্ট দিয়েছেন এই শিল্পী।
সম্পর্কিত খবর
লেখার শুরতে আসিফ আকবর বলেন, ‘নিজের যৌবনের জাগরণ উঠেছে আমার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে; প্রশ্নও এসেছে তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে। আমাদের সামাজিকতায় এমনিতেই নানা প্রতিবন্ধকতা। প্রথম প্রশ্ন থাকে ছেলে ইনকাম করে কিনা! ফ্যামিলি স্ট্যাটাসও একটা ফ্যাক্টর। যে মেয়েটা প্রাপ্তবয়স্ক তার মতামতও জড়িয়ে থাকে একই ফালতু প্রশ্নে। সমাজের অপ্রয়োজনীয় হিসাবে জীবন চলে এখানে। শরীয়ত মোতাবেক বিয়ের পদ্ধতি আদৌ মানা হয় কিনা জানি না, তবে কাবিননামার ক্যারিকেচারে উসুলের প্রেসারটা পাত্র নামের বিবাহ উন্মুখ ছেলেটাকে হতাশ করবেই। জিতে যেতে পারলে মঙ্গল, সমস্যা হলো সবাই জিততে পারে না।’
কাবিনের সময় সিকিউরিটি বাবদ যে অর্থ ইদানীং চাওয়া হয় তা একধরনের ব্ল্যাকমেইলিং বলে মনে করেন আসিফ। তার মতে—‘কাবিননামার সময় সিকিউরিটি বাবদ যে অর্থ ইদানীং চাওয়া হয়, সেটা একধরনের ব্ল্যাকমেইলিং। একটা বিয়ের যোগ্য যুবক এই প্রেসারে পুরুষ হওয়ার আগেই বৃদ্ধ হয়ে যায়। ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য ভবিষ্যত নিরাপত্তার প্রশ্ন ওঠা অবশ্যই কিছুটা অবান্তর। বিয়ে মানেই একটা অনন্ত জীবনের হিসাব, সেখানে শর্ত আসলে তো বন্ধনের আসল সংযোগ পিছিয়ে যাবে। এটা অন্যায়, রাষ্ট্রের উচিত ম্যারেজ লোনটাকে সরল সুদের কিস্তিতে ফেলে দেয়া। নিশ্চিত করতে হবে সংসার করার অধিকার।’
নারী নির্যাতনের মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে আসিফ আকবর বলেন, ‘আরো একটা ঝামেলা আছে নারী নির্যাতন টাইটেলে। কোনো কারণে ঝামেলা হলেই ছেলেটাকে ফাঁসিয়ে দেয়ার লাইন আদালত পর্যন্ত প্রায়ই যায়, জামিনবিহীন ভয়ংকর মামলা। অপরাধ বিবেচনায় প্রমাণের আগেই একটা ছেলে অসহায় হয়ে পড়ে। সব ছেলে ফেরেশতা হবে না, এটা মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই। সমাজের অসম চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করতে হবেই। এত শর্তের বেড়াজালে দীর্ঘ বৈবাহিক জীবন মেইনটেইন করা প্রতিটি পুরুষের জন্য একধরনের মানসিক টর্চার। খোরপোশ কিংবা মেয়েদের লাইফের সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে গিয়ে, এদেশে আসলে পুরুষ নির্যাতনের অটো শাস্তিযজ্ঞ চলছে। নারী পুরুষের সাংসারিক সমঝোতা জরুরি।’
স্ত্রীর সঙ্গে লেনদেন বড্ড বেমানান। তা উল্লেখ করে আসিফ আকবর বলেন, ‘বিয়ে করতে চাওয়া ছেলেটাকে বাংলাদেশের সংবিধান না বুঝিয়ে স্বস্তি দেয়া প্রয়োজন। কিছু বাই ডিফল্ট পুরুষ ছাড়া সবাই সংসার করে বাবা হতে চায়। মন নরম করুন, অনাগত সুন্দর জীবন নামের ফুলগুলো ফুটতে দিন। আমি শিওর, বিয়ের মাধ্যমে শ্বাশত সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। লেনদেন শুধু ঝামেলাই সৃষ্টি করে, অনন্ত ভালোবাসার জায়গায় হিসাব-নিকাশ ঢুকে যায়। চাপ সৃষ্টি আর নয়, ভালোবাসা খুঁজুন। আমার পরিবারের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক বেগম সালমা আসিফ নিজেই একজন অনন্য উদাহরণ। যিনি আমার সারা জীবনের হিস্যা, তার সাথে লেনদেন বড্ড বেমানান।’
