নায়ক মান্নার মৃত্যু, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলার নিষ্পত্তি চেয়ে আদালতে স্ত্রী

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সুপারস্টার চিত্রনায়ক এসএম আসলাম তালুকদার ওরফে মান্না। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তখন অভিযোগ উঠেছিল, মান্নার অকাল মৃত্যুতে ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলা ছিল।

মান্নার স্ত্রী শেলী বলেন, “২০০৮ সালে মান্না আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, সেই ২০০৮ সালে আমরা একটি মামলা দায়ের করেছিলাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মামলাটি হলো অবহেলাজনিত মৃত্যু। সেই সময় মামলাটি মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছিল। সবার মধ্যে একটা প্রত্যাশা ছিল মামলটি বিষয়ে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে, কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা কোনো রেজাল্ট পাচ্ছি না। আমরা চাই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হোক।”

যে চিকিৎসকদের অবহেলায় চিত্রনায়ক মান্নার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয় তারা হলেন- ডা. এনায়েত হোসেন শেখ, ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস, ডা. মোমেনুজ্জামান, ডা. খন্দকার মাহবুব সোহাইল, ডা. ফাতেমা ও ডা. মাইনুল ইসলাম মজুমদার।

এর আগে, ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নায়ক মান্নার পরিবার। এ মামলার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হয়। তদন্তে প্রাথমিকভাবে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ছয় ডাক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরদিনই তারা হাইকোর্টে জামিনের জন্য গেলে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাদের আট সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।

একই বছরের ১৬ মার্চ চিকিৎসকরা আত্মসমর্পণ করলে ৫০ হাজার টাকা বন্ডে স্বাক্ষর করে জামিন লাভ করেন। এরপর ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর ছয় ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিশেষ দায়রা জজ ফিরোজ আলম। এরপর এক, দুই ও তিন নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য থাকা দিনেই সংশ্লিষ্ট বিচারক বদলি হয়ে যান। ফলে থেমে যায় সাক্ষ্যগ্রহণ।

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। কিন্তু সেই রিট আবেদনের শুানানিও শুরু করছেন না আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। ২০১১ সালে মামলাটি শুনানির জন্য কার্যদিবস ধার্য থাকলেও আসামিপক্ষ শুনানি না করে সময়ক্ষেপণ করছেন বলে অভিযোগ মান্নার মামলার আইনজীবী ড. ব্যারিস্টার খন্দকার মুহাম্মদ মুশফিকুল হুদা।

বর্তমানে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ফলে মান্নার মৃত্যুর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও নিষ্পত্তি হয়নি মামলাটি।