রয়্যাল আলবার্ট হলে বিশ্বের প্রাচীন সংগীত নিয়ে সৌধের অভিনব প্রযোজনা

যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত রয়্যাল আলবার্ট হলে মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে নতুন পরিবেশনা ‘শৃঙ্গার ও পার্থিব প্রণয়ের গান: ঠুমরি থেকে ট্রুবাডোর’। প্রকল্পটি প্রযোজনা করেছে যুক্তরাজ্যে দক্ষিণ এশীয় শিল্পের সাংস্কৃতিক সংস্থা সৌধ। ‘ফ্রিদা কাহলো থ্রু ইন্ডিয়ান ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক’-এর ব্যাপক সাফল্যের পর ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আলবার্ট হলের এলগার রুমে অনুষ্ঠিত হবে সৌধের এই নতুন শিল্পপ্রকল্প। এতে বাংলা টপ্পা, কীর্তন, দক্ষিণ ভারতীয় শাস্ত্রীয় উপশাস্ত্রীয় সংগীতের পাশাপাশি থাকছে প্রাচীন গ্রিক, চীনা, আরব্য, ইতালিয়ান বেলকান্ট ও আদি-ইউরোপীয় ধ্রুপদি সংগীত ট্রুবাডোরের সম্মোহনী সব উপস্থাপনা। যোগ দেবেন নানা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিশ্ববিখ্যাত সংগীত কুশীলবেরা।

এই শিল্প উদ্যোগের পরিচালক আহমেদ কায়সার জানান আয়োজনের উদ্দেশ্য নিয়ে। তিনি বলেন, দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন সংগীত, কবিতা ও চিত্রকর্ম দিয়ে এই ভোগসর্বস্ব আধুনিক জীবনে ইন্দ্রীয় সুখের নতুন অর্থ ও ব্যাখ্যা আবিষ্কার করার এক দার্শনিক অনুসন্ধিৎসার লক্ষ্য নিয়ে এই আয়োজন।

আহমেদ কায়সার আরও বলেন, সিল্ক রুটসহ বিভিন্ন রুটে মানুষের শিল্পও সর্বজনীন। এই বিচিত্র আবেগ বিভিন্ন ভৌগোলিক পরিবেশে যাতায়াত করেছে, তাই এসব পরিবেশনার ভেতর যেমন শিল্পভাবনা রয়েছে; পাশাপাশি রয়েছে মানুষের সর্বজনীন স্বপ্ন ও বাসনার এক গূঢ় আত্মীয়তাও। দর্শকেরা এই পরিবেশনা যেমন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করবেন, তেমনি প্রাচীন সংগীত ও সাহিত্যের নিরিখে মানুষের ইন্দ্রীয় সুখ নিয়ে নতুন নতুন চিন্তাও তৈরি হবে।

এই নিরীক্ষাধর্মী পরিবেশনা বাঙালি ও দক্ষিণ এশীয় সংগীতস্রষ্টাদের কাছে নতুন নতুন সুর, বিশ্বের লুপ্তপ্রায় বিচিত্র সব প্রাচীন সংগীতের এক নতুন জানালা উন্মোচন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আহমেদ কায়সার।

সৌধের এই নতুন শিল্প-উদ্যোগে সংগীত পরিবেশন করবেন ইতালিয়ান বেলকান্ট সংগীতের শেষ ও শীর্ষতম প্রতিনিধি জিয়াজান, খ্রিষ্টপূর্ব দুই হাজার বছরের প্রাচীন চীনা বাদ্যযন্ত্র গুজেংবাদক ইজিয়া তু, গ্রিক-লেবানিজ কণ্ঠশিল্পী লারা ইদি, নিয়াপলিটান ট্রুবাডোর শিল্পী রসেলা বন্ডি। এ ছাড়া আছেন হিন্দুস্তানি ধ্রুপদি শিল্পী ও ওস্তাদ রশিদ খানের সঙ্গীতশিষ্য কোয়েল ভট্টাচার্য ও কুন্তল দাস, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংগীতশিল্পী গৌরি চৌধুরী, ফারজানা সিফাত ও অমিত দে। কবিতা পাঠ করবেন শ্রী গাঙুলী ও আবৃত্তিকার তানজিনা নূর-ই সিদ্দীক।

সৌধ এক যুগের বেশি সময় ধরে সাউথ ব্যাংক সেন্টার, রয়্যাল আলবার্ট হল, হাউস অব কমন্স, হারোগেট থিয়েটার, এডিনবরা ফেস্টিভ্যাল, ওয়েলশ পার্লামেন্ট, স্কটিশ পার্লামেন্ট, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, বার্মিংহাম সিম্ফোনি হলসহ যুক্তরাজ্যের মূল ধারার প্রধান প্রধান শিল্প ও একাডেমিক ভেন্যুতে দক্ষিণ এশীয় ও বিশ্বের অন্যান্য ধ্রুপদি শিল্পের প্রযোজনা দিয়ে যুক্তরাজ্য ও বাইরের দেশগুলোয় প্রশংসা কুড়িয়েছে।