• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বাণিজ্যমেলা

উদ্বোধন হলেও এখনো চলছে প্রস্তুতির কাজ

প্রকাশ:  ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২২ | আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর রোববার (১ জানুয়ারি) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধন হলেও মেলার প্রস্তুতির সব কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। মেলা কর্তৃপক্ষের আশা, শুক্রবারের (৬ জানুয়ারি) আগেই মেলার সব কাজ শেষ হবে।

সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুর থেকে সরেজমিনে পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলা শুরুর সময় সকালে লোকসমাগম কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকসমাগম বাড়তে থাকে।

মেলা শুরু হয়েছে ১ জানুয়ারি থেকে। তবে বেশির ভাগ স্টলের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পুরোপুরি কাজ শেষ করতে আরো দুই থেকে তিন দিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। স্টল নির্মাণে দেরি কেন হচ্ছে জানতে চাইলে বেশির ভাগ নির্মাণ শ্রমিক জানান, দেরিতে কাজ শুরু করার ফলে সময় মতো কাজ শেষ করা যায়নি।

মেলার বেচাবিক্রি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফ্যাশন হাউস জয়িতার ইনচার্জ মেজবাউল হক বলেন, প্রতিবারই মেলা শুরুর প্রথমে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হয়। এবারো তাই হচ্ছে। এখনো অনেক স্টলের কাজ চলছে। বিক্রি শুরু হয়নি। সেজন্য আসছেন না ক্রেতারা।

মেলায় ভিসতা ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন আকাশ বলেন, আশা করছি- শুক্রবার থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়বে এবং এবছর মেলায় এক কোটি দর্শনার্থী হবে বলে ধারণা করছি।

জানা যায়, গত বছর মেলা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানির আদেশ পেয়েছিলো। এবারের রপ্তানির আদেশ গতবারের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হবে এমটাই আশা করছেন মেলা কর্তৃপক্ষ।

বাণিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী (ইপিবি সচিব) বলেন, মেলার নাম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হলেও এখানে দেশি-বিদেশি সকলেরই আগমন ঘটে। শুধু বিদেশি অর্ডারের জন্যই মেলা, বিষয়টি এমন নয়। এখানে ছোট উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ীরা যাতে তাদের পণ্যের প্রচার করতে পারেন, এমন প্ল্যাটফর্মই হচ্ছে বাণিজ্যমেলা। মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশিয় এবং বিদেশি পণ্যগুলো সকল ক্রেতার সামনে তুলে ধরা। গতবারের তুলনায় এবারের বাণিজ্যমেলার পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর মেলায় ২২৫টি স্টল ছিল। এ বছর মেলায় আরো ১০৬টি স্টল বাড়িয়ে মোট ৩৩১টি স্টল রয়েছে।

তিনি বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন বুরোর (ইপিবি) পক্ষ থেকে আমরা ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে ছোট বড় সকল ধরনের প্যাভেলিয়নের ব্যবস্থা করেছি। যে কেউ চাইলে যে কোনো স্টল নিতে পারবেন। সে জন্য আমরা যথেষ্ট জায়গা দিচ্ছি। এবারের মেলায় আমরা ইলেকট্রনিক পণ্য, ফার্নিচারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির পণ্যের জন্য আলাদা জোন করে দিয়েছি। মেলায় এখনো কিছু কাজ বাকি আছে, কাজগুলো শেষ হলে মেলা পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে।

মেলায় জনসাধারণের নিরাপত্তার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, মেলার নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি ভালোই চলছে। মেলার নিরাপত্তা মোট তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ভাগেই সাধারণ ফোর্সের সঙ্গে অফিসার হিসেবে একজন করে অ্যাডিশনাল এসপি এবং একজন করে এএসপি কাজ করছেন। কোনো কোনো জায়গায় ফোর্সের ইনচার্জ হিসেবে একজন ইনেসপেক্টর বা সাব-ইনেসপেক্টর দায়িত্বে থাকছেন। এছাড়া সব প্রতিটি গেটে আমাদের মোবাইল টিম আছে। মেলার বাইরে ৫টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের ফুড পেট্রোলও কাজ করছে।

তিনি বলেন, পুরো মাসের হিসেবে মেলায় আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। আশা রাখি কোনো সমস্যা হবে না। তবে মেলায় এখন পর্যন্ত সব স্টল বসেনি। এক অর্থে বলা যায় মেলা প্রস্তুতি পর্যায়ে আছে।

মেলা প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষকে পৌঁছে দিতে বিআরটিসি শাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সার্ভিস কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে পূর্বাচল বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যাতায়াত করবে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত চলবে বিআরটিসির শাটল সার্ভিস। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা করে। মেলা উপলক্ষে সর্বমোট ১৫০টি বিআরটিসি বাস প্রস্তুত করা হয়েছে।

বিআরটিসি শাটল সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক অফিসার জাফর আহমেদ বলেন, মেলা প্রাঙ্গণে যাওয়ার যেহেতু নির্ধারিত কোনো ট্রান্সপোর্ট নেই, সে কারণে এই শাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা করা। গত বছর রাস্তা ভালো ছিলো না। সে তুলনায় এ বছর রাস্তা অনেক ভালো। ফলে যাত্রীর চাপ এবারে বেশি থাকবে। তবে মেলা এখনো পর্যন্ত সেভাবে জমে ওঠেনি। সে জন্য যাত্রী চাপও কম। তাই গতকাল মাত্র ১৯টি বিআরটিসি বাস যাত্রীসেবা দিয়েছে। আজ প্রাথমিকভাবে ২৫টি বাস যাত্রীসেবা দিচ্ছে। প্রয়োজনে যাত্রীর চাহিদা অনুযায়ী আরো বাস নামানো হবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

বাণিজ্যমেলা,কাজ,প্রস্তুতি,উদ্বোধন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close