• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন ও কর্ডএইড-এর প্লাস্টিক বাই-ব্যাক সেন্টার

প্রকাশ:  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে পরিচালিত কর্ডএইড-এর প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প রেজিলিয়েন্ট (RESILIENT) এক নতুন মাইলফলক অর্জন করলো। নারায়ণগঞ্জে এই প্রকল্পের একটি প্রধান অংশ বাই-ব্যাক সেন্টার (প্লাস্টিক বাজার) উদ্বোধন করা হয়। দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের অনুদানের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বাই-ব্যাক সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে দুজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে বর্জ্য সমন্বয়কের ভূমিকায় উন্নীত করা, গ্রিন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা এবং ইকোসিস্টেমকে প্লাস্টিক বর্জ্যমুক্ত করার জন্য প্লাস্টিক সংগ্রহ পদ্ধতিকে উন্নত করা প্রকল্পটির উদ্দেশ্য। এই সেন্টারগুলো কমিউনিটির জন্য রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। এখানে প্লাস্টিক, কাগজ, ক্যান, কাচ এবং পিইটি বোতলের মতো রিসাইক্লেবল প্লাস্টিক কেনা, বাছাই এবং ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী ও রিসাইক্লারদের কাছে পুনরায় বিক্রি করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ৪০০ জন স্থানীয় পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও কমিউনিটির প্রায় ১১,০০০ জন সদস্য প্লাস্টিক বিক্রির মাধ্যমে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।

সেন্টারটি উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন। উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. মঈনুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. কামরুল হাসান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য অসিত বরণ বিশ্বাস, কর্ডএইড বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম হেড মো. আবুল কালাম আজাদ এবং রেজিলিয়েন্ট প্রকল্পের প্রকল্প ম্যানেজার মো. ফিরোজ আলম।

বাই-ব্যাক সেন্টারের ধারণার পেছনে সম্মানিত মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী’র অবদান অন্যতম। তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জ নগরীকে সবুজ, নির্মল, প্রাণবন্ত এবং দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে কর্পোরেশনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সবুজ নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলা আমাদের সবার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এরই ধারাবাহিকতায় প্লাস্টিক বাই-ব্যাক সেন্টারের মতো উদ্ভাবনী পদ্ধতি আমাদের কাজকে আরও ত্বরান্বিত করবে। উদ্যোগটি সত্যিই প্রশংসনীয় এবং এটি বিশেষভাবে নারী পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আর্থিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে। আমি নগরবাসীসহ এই কার্যক্রমের সাথে জড়িত সবাইকে স্বাগত জানাই এবং প্লাস্টিক দূষণ সমস্যাকে আরও কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

বাই-ব্যাক সেন্টারগুলো সকল পরিচ্ছন্নতা কর্মীর জীবন বদলে দেওয়ার সুবিধা প্রদান করে। তবে যেহেতু এই খাতে নারী কর্মীরা তুলনামূলকভাবে সুবিধাবঞ্চিত, তাই তাদের এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ ও সুবিধা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়। এসব সেন্টার প্লাস্টিক বর্জ্য উপাদান বিক্রির জন্য নিয়মতান্ত্রিক ও স্থিতিশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। এর ফলে এসব কর্মীর ধারাবাহিক ও বেশি উপার্জনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এছাড়া, নিয়ন্ত্রিত মানদণ্ড মেনে চলা, প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান এবং নিরাপদে বর্জ্য হ্যান্ডলিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে এই সেন্টারগুলো সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করে। পাশাপাশি, তারা আর্থিক সাক্ষরতা, সঞ্চয় স্কিম ও ক্রেডিট সুবিধা এবং নারী পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের উপার্জন ব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক নিরাপত্তার পরিকল্পনায় সহায়তার মতো সেবাও প্রদান করে। দুটি সেন্টার দক্ষতার উন্নতির সুযোগও প্রদান করবে, যা রিসাইক্লিং ভ্যালু চেইনে আরও তাৎপর্যপূর্ণ স্থান অর্জনে নারীদের সাহায্য করবে।

দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের রেজিলিয়েন্ট (Recycling for the Environment by Strengthening Income and Livelihood of the Entrepreneurs) প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে কর্ডএইড। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো নিয়মতান্ত্রিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহে কাজ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং স্থানীয় সেবা প্রদানকারী, সিটি কর্পোরেশন, সুশীল সমাজ সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের সাথে মিলিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা। প্রকল্পটি বিশেষ কিছু ক্লাস্টারে উৎস থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং বর্ধিত আয় ও জীবিকার সুযোগের জন্য অপরিশোধিত প্লাস্টিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করে।

জাতিসংঘ নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশ এবং দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন। প্লাস্টিক সংগ্রহ, ওয়াটার স্টুয়ার্ডশিপ এবং উইমেন বিজনেস সেন্টারের মতো কোম্পানিটির বৈশ্বিক উদ্যোগগুলোর দেশীয় সংস্করণ সমাজের উন্নয়নে সক্রিয় অবদান রাখছে।

কোকা-কোলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close