• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘রাজধানীর ৯৮ শতাংশ হাসপাতাল অগ্নিঝুঁকিতে’

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ঢাকা মহানগরীর ৬২৩ হাসপাতালে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাচাই করে দেখা গেছে ৯৮ শতাংশ হাসপাতাল অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ২০১৭ সালের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে ‘হাসপাতালের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স’র মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান এ তথ্য জানান।

সম্পর্কিত খবর

    তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ‘ওয়াক আপ কল’ ছিল। অধিকাংশ হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড হলে হাসপাতালে রোগী ও স্বজনরা কিভাবে বেরুবেন তা জানেন না। অনেক হাসপাতাল এ স্টোরেজ সিস্টেম ঠিক নেই হাসপাতালে রোগী নির্গমন ব্যবস্থা একেবারে নাজুক। ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিয়ত ঝুঁকি মনিটরিং ও সে অনুযায়ী করণীয় সুপারিশ করে আসছে।

    ঢাকা মহানগর যত্রতত্র অপরিকল্পিত হাসপাতাল নির্মাণ ও আবাসিক ভবনের হাসপাতাল পরিচালনার বিষয়ে আলী আহাম্মেদ খান দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, হাসপাতাল পরিচালনার জন্য বিশেষ স্থাপনা প্রয়োজন হয়। সেখানে অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। দুর্বল হাউসকিপিং, কারপারকিং, রান্নাঘর, বয়লার হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত অগ্নি-দুর্ঘটনা বিষয়ে হাসপাতালে কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত ফায়ার ফাইটিং মহড়া ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করুন। আগুন লাগলে প্যানিক হবে না। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র চালানো শিখে রাখলে শুরুর ৩০ মিনিট আপনারা নিজেরেই অগ্নি-দুর্ঘটনা মোকাবিলা করতে পারবেন।

    শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক উত্তম বড়ুয়া সবার উদ্দেশ্যে বলেন, অতি কম সময়ে কোনো ধরনের প্রাণহানী ছাড়াই একটি এক্সিট দিয়ে ওইদিনের অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র অক্টোবরে মহড়া কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কারণে। আমাদের এ ঘটনা যেকোনো হাসপাতালের জন্য শিক্ষণীয়। অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটনায় আমাদের আশ-পাশের হাসপাতালগুলোতে আমাদের যেভাবে সহায়তা করেছিল তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণ থাকার কারণেই ওইদিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।

    ফায়ার সার্ভিসর মহাপরিচালক (অপারেশন) শাকিল আহমেদ বলেন, অধিকাংশ হাসপাতালেই ফায়ার লগ বুক মেনটেন করা হয় না। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি জানার কোনো সুযোগ থাকে না বা তাৎক্ষণিক কারণ নিরুপণ করাও সম্ভব হয় না। হাসপাতাল পরিচালনাকারীদের এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

    জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, শেরেবাংলা নগর এলাকায় মোট নয়টি বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে। যেকোনো অগ্নি-দুর্ঘটনা সেবা পাওয়ার জন্য কোনো ফায়ারস্টেশন নেই। এই এলাকায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দুর্ঘটনার কথা বিবেচনা করে অন্তত একটি মিনি ফায়ারস্টেশন ও অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার।

    সভার শেষে ফায়ার সার্ভিস’র মহাপরিচালক বলেন, আপনাদের পরামর্শগুলো আমরা বিবেচনা করবো। আপনারা ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয় করে আমাদের জানান আমরা সে অনুযায়ী আপনাদের করণীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে জানাবো আগুন লাগলে মানুষ যতোটা না দেওয়ায় মারা যায় তার চেয়ে বেশি তাৎক্ষণিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন যা মোটেই ঠিক না। সিঁড়ির সেই দরজাটি যদি ফায়ার প্রুফ করা যায় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে আগুন আর উপরে উঠতে পারে না।

    যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনায় প্রথম ৩০ মিনিট ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত কয়টি লড়াইটি আপনাকেই করতে হবে তাই অগ্নি নিরাপত্তায় টাকা খরচ কোনো ব্যয় নয়, এটি আপনার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য একটি বড় বিনিয়োগ।

    সভায় ঢাকা ঢাকার আশ-পাশের জেলাগুলো থেকে আগত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালক কর্মকর্তা অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে তারা মতবিনিময় করেন। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে ভবিষ্যতে কি ধরনের কাজ করবেন তা সবাইকে অবহিত করা হয়।

    পিবিডি/জিএম

    ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর,মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ,শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close