• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

আজমেরীর এক বাসের ড্রাইভিং সিটে হেলপার, অন্যজন মাদকাসক্ত

প্রকাশ:  ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মগবাজার মোড়ে সদরঘাট-গাজীপুর রুটে চলাচলরত আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে পিষ্ট হয়ে এক হকার কিশোরের মৃত্যু হয়। সে সময় এক বাসের চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও আরেক বাস চালাচ্ছিলেন হেলপার।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ২০ জানুয়ারি মগবাজার মোড়ে বিকেল ৫টার দিকে আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের দু’টি বাসের মাঝে পড়ে আহত হন রাকিবুল হাসান (১৪) নামে এক কিশোর। ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর দুই ঘাতক ড্রাইভার বাস দুটি রেখে পালিয়ে যায়।

দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা সড়ক ও পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় ২০ জানুয়ারি রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৬। র‌্যাব জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

র‌্যাব-৩ এর একটি দল ২৫ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা থেকে দুই বাসের চালক মো. মনির হোসেন (২৭) ও মো. ইমরানকে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দু’জনই ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য দেয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মনির হোসেন (২৭) জানান, তিনি ৫ বছর মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত ছিলেন। গত তিন মাস আগে বাংলাদেশে আসেন। প্রায় দেড় মাস আগে ঢাকায় কর্মসংস্থানের জন্য আসেন। এক মাস থেকে আজমেরী গ্লোরী গাড়ির চালকের সঙ্গে ওই গাড়িতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে হেলপারি শুরু করেন। তিনি মাঝে মধ্যে বাসটি নিজেও চালাতেন।

গত ২০ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় আজমেরী গ্লোরী পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৫৭৮৭) সদরঘাট থেকে গাজীপুর চন্দ্রার উদ্দেশ্যে গাড়ীর মূল চালক চালিয়ে নিয়ে আসেন। পথিমধ্যে চালক সুমন গুলিস্তানে এসে গাড়িটি হেলপার মনির হোসেনের দায়িত্বে দিয়ে যান। মনির গাড়িটি চালিয়ে মগবাজার মোড়ে নিয়ে আসেন।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানান, মগবাজার মোড়ের সিগন্যাল ছেড়ে দিলে দ্রুত গাড়ি দুইটি এগিয়ে যাচ্ছিলো। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো পরবর্তী স্টপেজে যে আগে পৌঁছাতে পারবে সে বাসের জন্য অপেক্ষারত বেশি সংখ্যক যাত্রীদের তার বাসে নিতে পারবে। এ অবস্থায় এক গাড়ি অন্যটিকে ওভারটেক করার সময় দুই গাড়ির মাঝখানে চাপা পড়ে ওই কিশোর। ঘটনার পরপরই দুই চালক মনির হোসেন ও ইমরান হোসেন বাস দু’টি রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

অন্যদিকে ইমরান হোসেন জানান, তিনি মালিকের কাছ থেকে দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ টাকা হারে ভাড়ায় নিয়ে বাসটি চালাতেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ইমরান মাদকাসক্ত। তার বিরুদ্ধে মাদকাসক্তির কারণে ২০২১ সালে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের ঘাতক বাসের একটির মূল চালক সুমন ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চালকের দায়িত্বে থাকা দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছি। আসামিদের থানায় সোপর্দ করা হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি তদন্তে তাদের ব্যত্যয় বা দায় পান তাহলে অবশ্যই আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/অ-ভি

মাদকাসক্ত,হেলপার,ড্রাইভিং সিট,বাস,আজমেরী গ্লোরী,পরিবহন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close