• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সিইসির বিরুদ্ধে সুজনের মানহানির অভিযোগ

প্রকাশ:  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছে বলে মনে করছে সংগঠনটি। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন সুজনের নেতৃবৃন্দ। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সিইসির দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুজন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সিইসির বক্তব্যে কেবল আমার নয়, সুজনের সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছেন, সবার মানহানি হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে মানহানি মামলা করব কি-না, পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

সুজন সম্পাদক বলেন, ‘দেশের মর্যাদাপূর্ণ একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে বসে তাঁকে এমন মিথ্যাচার করতে দেখে আমরা হতবাক। তাঁর এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদেই আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন। প্রথমত, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ড. বদিউল আলম মজুমদারের ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেনের কোনো সম্পর্ক নেই এবং কোনো দিন ছিলও না। তিনি কমিশন থেকে কখনো কোনো কাজ নেননি, অসমাপ্ত রাখারতো কোনো প্রশ্নই আসে না।’

সংবাদ সম্মেলনে কোন প্রক্রিয়ায় ড. শামসুল হুদা কমিশন সুজনকে কাজ দিয়েছিল জানতে চাইলে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এটা টেকনিক্যাল বিষয়। আমি টেকনিক্যাল পদ্ধতি জানি না। আদালতের রায় আছে যে প্রার্থীদের (হলফনামা) তথ্য প্রচার করতে হবে। তখন তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদা কমিশন এই কাজে আমাদের সহায়তা নিয়েছিল। আমরা জানি না, যেহেতু টেকনিক্যাল বিষয়, সুতরাং তাঁরাই বলতে পারবেন কোন প্রক্রিয়ায় কাজ দিয়েছিলেন।’

সংবাদ সম্মেলনে ড. তোফায়েল আহম্মেদ, এম হাফিজউদ্দীন খান, ড. শাহদীন মালিক, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, দিলীপ কুমার সরকারসহ সুজনের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা অনেক। রাতকে দিন আর দিনকে রাত করা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাঁরা সব কাজ করতে পারে। আদালতের রায় আছে-নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ উঠলে ইসি তদন্ত করতে পারে। তদন্তে সেই অভিযোগ প্রমাণ হলে নির্বাচন বাতিল করতে পারে। কিন্তু তাঁরা কোনোটাই করেনি।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘দলগুলো আদালতে যায়নি বলে সিইসি অজুহাত দেখিয়েছেন। কিন্তু ৭০ টির মতো মামলা হয়েছে। একটিরও শুনানি হয়নি। ব্যালট পেপার খুললে মধ্যরাতে ভোট হয়েছে প্রমাণ হতো। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) প্রিসাইডিং কর্মকর্তার হাতে ব্যালট ইউনিটে ২৫ শতাংশ ব্যালট পেপার ওপেন করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এমন অনিয়মের বিষয়ও উঠে এসেছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, এ রকম একজন খলনায়ককে সিইসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে ড. শাহদীন মালিক বলেন, সমালোচনা এড়িয়ে যাওয়ার নিকৃষ্ট পন্থা হচ্ছে ব্যক্তি আক্রমণ। সিইসির বক্তব্য অপ্রত্যাশিত।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, একজন বিদায়ের সময় ভুল ভ্রান্তি নিয়ে মাফ চায়, সুন্দরভাবে বিদায় নেয়। কিন্তু তিনি উল্টোটা করেছেন। সুজন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া কাজ করায় কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার হয়নি। সেই কমিশন অনেক বিল সরাসরি তাঁরাই দিয়েছে। যে বই ছাপানো হয়েছে, সেটির বিলও প্রথমা প্রকাশনীকে তাঁরাই সরাসরি দিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যৌক্তিক সমালোচনার উপযুক্ত জবাব না থাকলে সমালোচকের চরিত্র হননের অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়া বহুল ব্যবহৃত একটি অপকৌশল। ঠিক এমনই এক অপকৌশল ব্যবহারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। গত ২৭ জানুয়ারি রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘আরএফইডি টক উইথ কে এম নূরুল হুদা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগসহ কিছু কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, অসত্য বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)।

পূর্বপশ্চিম- এনই

সুজন,ড. বদিউল আলম মজুমদার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close