• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে: সিইসি

প্রকাশ:  ১২ অক্টোবর ২০২২, ১৩:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার (১২ অক্টোবর) নির্বাচন ভবন থেকে সিসি ক্যামেরায় ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গোপন কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। তাই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মূল অ্যাকশন হিসেবে আমরা ৪৫টি কেন্দ্র বন্ধ করেছি। এখন চাকরি বিধি অনুযায়ী বা অন্য বিধি অনুযায়ী কী অ্যাকশন নেবো তা পরে দেখবো। আমরা টেলিফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি, যে আমরা এখান থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখতে পেয়েছি। তাই সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা হয়েছে যে, কমিশন যদি মনে করে নির্বাচন সঠিক ভাবে হচ্ছে না তাহলে কমিশন নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। আমরা সেই আলোকে নিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যখন নেবো, তখন জানাবো।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণের বাইরে কেন চলে গেল তা আমরা বলতে পারবো না। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন যে গোপন কক্ষে হচ্ছে (ভোট ডাকাতি), এবং সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। কেন এমন হচ্ছে তা চটজলদি বলতে পারবো না।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা আমরা বলতে পারছি না। ইভিএমেরও কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না। অনেকেই দেখছি গেঞ্জি পরে, শাড়ি পরে যেখানে প্রতীক আছে। দেখা যাচ্ছে তারা আচরণ বিধি লঙ্ঘণ করছেন। এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থী।

তিনি বলেন, এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারাই আইন মানছেন না তাদেরকেই আমরা ডাকাত দুর্বৃত্ত বলতে পারি। কারণ আইনের প্রতি সকলকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সকলে যদি আইন না মানি নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।

এর আগে সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। কিন্তু ভোটগ্রহণের শুরুতেই অনিয়ম, কারচুপি, জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল এবং গোপন কক্ষে বিভিন্ন লোকজনের উপস্থিতির কারণে ভোট দিতে না পারার অভিযোগ আসতে থাকে ইসিতে। এসব অভিযোগে ৪৩টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে ইসি।

গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনী এলাকায় মোট এক হাজার ২৪২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে দুটি করে ২৯০ এবং ৯৫২টি ভোটকক্ষের সবকটির ভেতরে (গোপন বুথ ছাড়া) সিসিটিভি স্থাপন করা হয়।

এছাড়া ভোটগ্রহণ সরাসরি পর্যবেক্ষণের জন্য ঢাকার নির্বাচন ভবনে একটি পর্যবেক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকেও সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ইসি।

ইসি সূত্র জানায়, সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গাইবান্ধা-৫ আসন গঠিত। এরমধ্যে সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন এবং ফুলছড়ি উপজেলা গজারিয়া, ফুলছড়ি, এরেন্ডাবাড়ী, ফজলুপুর ইউনিয়ন চরাঞ্চল ও দুর্গম হওয়ায় ওই এলাকায় জিএসএম রাউটার ব্যবহার করে সিসিটিভিতে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চলছে।

গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এরমধ্যে সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটিসহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন মিলে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন।

এ উপ-নির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৫৭টিসহ মোট ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আসনটিতে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু (লাঙল), বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক)।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

সিইসি,ভোটগ্রহণ,নিয়ন্ত্রণ,কাজী হাবিবুল আউয়াল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close