• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ:  ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশি কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দুটি বইয়ের মোড় উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রুশ দূতাবাস থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে, সেখানে অনেকগুলো কথা বলা হয়েছে। প্রথমত কিছু কিছু দেশ যখন সরকারকে চাপে রাখতে চেষ্টা করে, তখন তারা মানবাধিকারের ধোয়া তোলে। অর্থাৎ সরকারকে চাপে রাখতে মানবাধিকারকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। রুশ বিবৃতিতে সে কথাও এসেছে।

তিনি বলেন, সেসব দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়, তারাই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু বাংলাদেশের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের বিষয়টিও তুলে ধরেছে রুশ দূতাবাস। আমরা সবসময় এমন বিবৃতি দেখিনি, তবে যারা ভিয়েনা কনভেনশন অমান্য করেন, তাদের বোধোদয় হওয়ার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বৈদেশিক ঋণ প্রত্যাখ্যান করি। বাংলাদেশ এক সময় পরমুখাপেক্ষী ছিলো। বাজেট প্রণয়নের জন্য বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। আমাদের অর্থমন্ত্রীকে প্যারিস কনসোর্টিয়ামের বৈঠকে ছুটে যেতে হতো। আমাদের বাজেটের বেশিরভাগ অংশ আসতো অনুদান ও ঋণ থেকে। এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আমাদের বাজেটের ৯০ শতাংশ আমরা নিজেরা জোগান দিই। বাংলাদেশ এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে।

তিনি বলেন, যখন বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করেন, তখন তা আমাদের স্বাধীনতা ও স্বকীয়তার জন্য হস্তক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায়। তবে যারা এই নাক গলান, তাদেরই দোষ দিচ্ছি না, বরং যারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে ছুটে গিয়ে তাদের পদলেহন করেন, তারাও দায়ী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কেবল পদলেহনই নয়, তাদের (কূটনীতিকদের) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। যারা এমনটা করেন, তারা সত্যিকারের দোষী।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, সব সূচকেই বাংলাদেশ আজ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। এ নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রচণ্ড বিতর্কও হয়। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র রচনার স্বার্থকতা আমরা দেখতে পেয়েছি। শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থকতা সেখানেই যে আজ পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে নিশ্বাস ফেলে।

দলের আসন্ন সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না- জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দলে জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মী-সমর্থক চায় শেখ হাসিনা যতোদিন বেঁচে আছেন, ততোদিন দলকে নেতৃত্ব দেবেন। কেবল দলই নয়, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও তার বিকল্প আজ বাংলাদেশে নেই। তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, একটি অনুন্নত দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছেন। উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার যে প্রাণান্তকর চেষ্টা, বিশ্ব সম্প্রদায় তার প্রশংসা করেছেন। তার বিকল্প আওয়ামী লীগে কেউ নেই।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন সবসময় জাতির জন্য মাইলফলক উল্লেখ করে দলের তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা থাকে। এখন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও রাজনীতির জন্য বার্তা থাকে। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো মাঝে মাঝে ফণা তুলছে। আর আমাদের দেশকে নিয়ে বিএনপিসহ তার মিত্ররা যেভাবে ষড়যন্ত্র করছে, এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে দিক নিদের্শনা থাকবে বলেও জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে আবারো ভূমিধস বিজয় ছিনিয়ে আনতে আমাদের দলকে আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে সুসংগঠিত করা হবে।

এক প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, সম্মেলন হলে অনেক নাম আসবে। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কে কোন পদে থাকবেন, তা একমাত্র তিনিই নির্ধারণ করবেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

ড. হাছান মাহমুদ,আওয়ামী লীগ,তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী,ভিয়েনা কনভেনশন,বিদেশি,কূটনীতিক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close