• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

২০২২ সালে বন্দুকযুদ্ধে ৪, হেফাজতে ১৫ মৃত্যু

প্রকাশ:  ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২২ সালে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এবং পুলিশের হেফাজতে ১৯ জনের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এর মধ্যে র‌্যাব সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ গেছে চারজনের। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন।

আসক বলছে, হেফাজতে মৃত্যুর মধ্যে গ্রেপ্তারের পর শারীরিক নির্যাতনে চারজন, হার্ট অ্যাটাকে একজন, গ্রেপ্তারের আগে শারীরিক নির্যাতনে চারজন, থানা হেফাজতে আত্মহত্যা করেছেন দুইজন এবং অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন চারজন।

সম্পর্কিত খবর

    শনিবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় আসক কার্যালয়ে ২০২২ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যবেক্ষণ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জনানো হয়।

    লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হয়েছিলেন পাঁচজন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে এবং ফিরে এসেছেন একজন।

    আসক জানায়, ২০২২ সালে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২২৬ জন সাংবাদিক। এ ছাড়া কুমিল্লায় দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক সাংবাদিক।

    এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ১২টি।

    সারা দেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৩৬ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৭ জন। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন।

    ২০২২ সালে নির্যাতনে মারা গেছে ৫১৬ জন শিশু, ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৬০ জন শিশু। এবং বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৫২ জন ছেলেশিশু। এর মধ্যে ৩৪ জন ছেলেশিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (মাদ্রাসা) বলাৎকারের শিকার হয়েছে।

    এ বছর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১৬ জনসহ মোট ২৩ বাংলাদেশির প্রাণ গেছে।

    গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৩৬ জন।

    এ বছর ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে ৮ বিভাগের মধ্যে শুধু রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় মামলা হয়েছে ২ হাজার ২৪৯টি।

    সভা-সমাবেশ করা নাগরিক অধিকার, কিন্তু এ বছর সমাবেশের ওপর ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে ৩৬ বার। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশ করতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জনানো হয়।

    এ ছাড়া ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর সারা দেশে পুলিশের ৩৩ হাজার ৪২৯টি অভিযানের ২৩ হাজার ৯৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অভিযানে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর নামে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে।

    এ ছাড়া প্রতি জেলায় রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ বছর নির্বাচন, রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে ৪৭৯টি। প্রাণ হারিয়েছেন ৭০ জন, আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৯১৪ জন।

    সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় সংখ্যাগত দিক থেকে ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো মনে হলেও ভেতরে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি। এ সময় দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতির জন্য আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ১৪টি সুপারিশ জানানো হয়।

    এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের গুমের শিকার বিএনপির নেতার বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যাওয়ার বিষয়টিকে আসকের পক্ষ থেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়।

    আরও বলা হয়, যেসব গোপন কারাগারের কথা শোনা যাচ্ছে, সেগুলো অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত এবং যারা যারা এ কাজের সঙ্গ যুক্ত তাদের বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন।

    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ এবং আসকের তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ নুর খান, পরিচালক লীনা গোস্বামী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট আবু আহম্মেদ ফয়জুল কবির।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close