• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

বিশ্বের কোন দেশে ১ কিমি রাস্তায় ২০ কোটি টাকা, প্রশ্ন ফরাসউদ্দিনের

প্রকাশ:  ০৯ মে ২০২৩, ২২:৩৯ | আপডেট : ১০ মে ২০২৩, ০০:১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, আমাদের দেশে উন্নয়নকাজে কেনাকাটায় সম্পূর্ণ নৈরাজ্য চলছে। বিশ্বের কোন দেশে এক কিলোমিটার রাস্তা করতে ২০ কোটি টাকা লাগে? হ্যাঁ, আমাদের দেশে লাগে এবং তা অনেক বেশিই লাগে। তারা এতো সাহস কোথা থেকে পান? তবে এটা পরিকল্পনা কমিশন যে ধরেছে, এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার (৯ মে) ‘দেশ রূপান্তরের কারিগর শেখ হাসিনা’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বইটি সম্পাদনা করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।

দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে নৈরাজ্য চলছে মন্তব্য করে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, এ দেশে কেন প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয় না? বেশি সময় লাগে কেন? পৃথিবীর সব দেশে যে প্রকল্পে সময় বেশি লাগে, তাদের (প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও ঠিকাদার) জরিমানা করা হয়। আর এখানে (বাংলাদেশ) প্রকল্পের আকার বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা কী ধরনের কথা? গরিব মানুষের টাকা; সেটা হোক করের টাকা বা ধার করে আনা মাথাপিছু ঋণের টাকা, তা দিয়েই তো এসব প্রকল্প করা হয়।

উন্নয়ন প্রকল্পে শৃঙ্খলা ফেরাতে পরামর্শও তুলে ধরেন সাবেক এ গভর্নর। তিনি বলেন, আমি একটা পরামর্শ দিয়েছিলাম। সেটা হলো- কিছু মেগা প্রকল্পকে স্লো-ডাউন করে তাদের ডোনারদের সঙ্গে আলোচনা করুন। রি-সিডিউল করে রি-পেমেন্টটাকে স্লো-ডাউন করলে ভালো হতো। পরিকল্পনা কমিশনকে প্রশ্ন করবো- পণ্য ও সেবা জনগণের টাকা দিয়ে যা ব্যবহার করি, বিশ্বমানের নিরিখে কেন মূল্য নির্ধারণ করে দেই না? যেসব ঠিকাদার বেশি দাম দেবেন, আমি তাদের অটোমেটিকলি অনুত্তীর্ণ করবো।

উন্নয়নে বৈষম্য প্রসঙ্গে মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, অমর্ত্য সেন বলেছেন, ২০১৯ সাল থেকে আমরা (বাংলাদেশ) ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছি। কিন্তু সেটা তো সামষ্টিক। ব্যক্তিপর্যায়ের বৈষম্যের কথা যদি আলোচনা করি, তাহলে আমি কী সমাজের ক্ষুদ্র (দরিদ্র) মানুষটার প্রতি সুবিচার করছি? যদি বছরে ৭০০ কোটি ডলার পাচার হয়...। আর এসব কথা যদি আমরা আমলে না নিয়ে শুধু শেখ হাসিনার প্রসংশা করে যাই, তাহলে কি তার (দরিদ্র ব্যক্তি) প্রতি সুবিচার করা হবে? এসব বন্ধ করার কি কোনো ব্যবস্থা নেই? আমি তো মনে করি, অবশ্যই আছে..।

যারা অর্থপাচার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন বা করতে চেয়েছিলেন, তাদের কর্মস্থল থেকে বদলি করা হয়েছে অভিযোগ তুলে সাবেক এ গভর্নর বলেন, যারা ব্যবস্থা করেছিলেন, তাদের তো বদলি করা হয়েছে। কাজটা হবে কীভাবে?

তিনি বলেন, যে কোনো কারণেই হোক বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে আসছে না। যেখানে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকসহ অনেকেই বলছেন, আড়াই কোটি মানুষের কাছে মাথাপিছু আয় পাঁচ হাজার ডলার আছে। মানে ছয় লাখ টাকা। তাহলে ৩০ লাখ লোক কেন কর দেবেন? বাকিদের কাছ থেকে আমি কেন কর আদায় করতে পারবো না। কাউকে কষ্ট দিয়ে কর যদি আদায় করতে না পারি, তাহলে কি বিনিয়োগ জিডিপি ৪০ শতাংশে যাবে? ৪০ শতাংশে না গেলে আমি কি দ্বিগুণ জিডিপি করতে পারবো?

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন,গভর্নর,বাংলাদেশ ব্যাংক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close