• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

‘কেউ সরে গেলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার কিছু নেই’

প্রকাশ:  ১৩ জুন ২০২৩, ১৭:১৬
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

বরিশালে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মেয়রপ্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় আসন্ন সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে ভোটের আগে কোনো দলের প্রার্থী সরে দাঁড়ালে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব একথা বলেন।

খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করে ইসি বলেন, সবার প্রচেষ্টায় সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট হয়েছে সিটি করপোরেশনে। প্রার্থীদের সবাই দুপুর পর্যন্ত সুন্দর ভোট হওয়ার কথা বলেছেন।

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সবসময় বেশি হয়ে থাকে। মেয়রের পাশাপাশি কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ভোট থাকে। যে কারণে ভোটার বেশি হয়। তবে আরও বেশি হলে আরেকটু ভালো হতো। যদিও বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টি না হলে হয়তো ভোটার উপস্থিতি আরও বেশি হতো।

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়রপ্রার্থী বরিশাল-খুলনার ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। সামনের দুই সিটি নির্বাচন বর্জনের কথা বলেছে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য কী- এই প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এটা একটা দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানে কমিশনের কিছু বলার নেই। কমিশন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

সেক্ষেত্রে সামনের ২ সিটির ভোট গ্রহণযোগ্য হবে কি না- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারতেছি না। কোনো দল ভোটে অংশ নেবে কি না সেটা রাজনৈতিক দলের বিষয়। দলগুলো নিজেদের মধ্যে ফয়সালা করবে। নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো সবার জন্য সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের আয়োজনের সকল প্রস্তুতি রাখা। আমরা সেটা করেছি।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করাও তো ইসির দায়িত্ব- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণার পর সবাই প্রতীক পেয়েছেন। প্রতীক পাওয়ার যদি কেউ নির্বাচন বর্জন করে তাহলে নির্বাচন কমিশন কী করবে? ব্যালটে তো তার প্রতীক আছে। প্রার্থী যদি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়ের মধ্যে বর্জন করতেন তাহলে একটা কথা ছিল। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দুদিন আগে যদি কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় সেটা রাজনৈতিক বিষয়। এখানে কমিশনের কিছু বলার নেই। একই সঙ্গে কেউ ভোট থেকে সরে দাঁড়ালে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার কিছু নেই বলেও দাবি করেন ইসি সচিব।

বরিশালে হামলার শিকার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীর অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, তিনি নির্বাচন নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি। ওখানে একটি ক্রিমিনাল অপরাধ হয়েছে। ঘটনার পরপরই নির্বাচন কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। রাতে এ ঘটনায় একজন আটকও হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র ইসির হাতছাড়া হওয়া নিয়ে বক্তব্য নেই

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়া বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্রে স্থানান্তরের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য নেই। রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব যতক্ষণ আছে, ততক্ষণ নির্বাচন কমিশন পালন করবো।

সচিব বলেন, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব আছে। যার ভেতরে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া ছিল না। আইন অনুযায়ী ইসিকে বলা আছে রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে যখন ছবিসহ ভোটার তালিকা হয়েছে, তার উপজাত হিসেবে প্রায় ৮ কোটি ৩ লাখ মানুষের তথ্য সমৃদ্ধ ভোটার তালিকা থেকে আইন করে এনআইডি দেওয়ার কাজ শুরু হয়। তার দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনকে।

তিনি বলেন, সরকার আইন করে নির্বাচন কমিশনকে এনআইডি দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিল। রাষ্ট্র আবার সেই আইন সংশোধন করে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিচ্ছে। এতে নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য নেই। রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব যতক্ষণ আছে, ততক্ষণ নির্বাচন কমিশন পালন করবে। রাষ্ট্র যখন এই দায়িত্ব অন্য কাউকে সম্পাদন করতে বলবে, তখন অন্যরা সম্পাদন করবে। এখানে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু নেই। নির্বাচন কমিশন সরকারি সিদ্ধান্ত অবশ্য মেনে চলছে, চলবে।

ইসি সচিব বলেন, আইনটি আমরা এখনো দেখিনি। গতকাল এনআইডির যে আইন ছিল এটাকে সংশোধন করে জাতীয় পরিচয়পত্র আইন-২০২৩ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। এটা পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় সংসদে যাবে। সংসদের বিল উত্থাপিত হবে। এরপর সেটি সংসদীয় কমিটিতে চলে যাবে। সংসদীয় কমিটি রিপোর্ট দেবে। রিপোর্ট দেওয়ার পর পুনরায় সংসদে উঠবে। সংসদে এরপর আইন আকারে পাস হবে। তারপর আমরা বলতে পারবো, আসলে কী হয়েছে।

ইসি সচিব আরও বলেন, এখন দুই ধরনের আইন হয়। একটাতে বলা থাকে অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর গেজেট প্রজ্ঞাপন থেকেই কার্যকর হয়। কিছু কিছু আইন থাকে যেখানে বলা হয়, এই আইন গেজেট প্রজ্ঞাপনে তারিখ থেকে বলবৎ হবে। সেক্ষেত্রে কী আছে আইনে সেটা যেহেতু আমরা জানি না, কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ বলতে পারবে।

নির্বাচন,ইসি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close